মইনুল ইসলাম বলেন, “প্রয়োজনীয় গ্যাসের চাপের অভাবে সময়মত পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় নামি-দামি কোম্পানি আমাদের অর্ডার বাতিল করেছে।”
Published : 03 Feb 2025, 05:36 PM
গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা ও নতুন করে দাম না বাড়ানো এবং টাইলস ও স্যানিটারি পণ্যের ওপর থেকে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সিরামিক শিল্প মালিকরা।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) উপদেষ্টা মীর নাছির হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশীয় টাইলস পণ্যে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ হারে এবং স্যানিটারি পণ্যে ১০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক (এসডি) রয়েছে।
এসব পণ্য এখন আর বিলাসদ্রব্য নয় জানিয়ে তিনি বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করার দাবি জানান।
মীর নাছির বলেন, “ব্যবসার খরচ অনেক বেড়ে গেছে। খরচ কমানো না গেলে শিল্প খাত প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাবে। বিশেষ করে গ্যাসের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে।”
এই শিল্পে গ্যাস সংকটের কারণে বড় ক্ষতির মুখে পড়ার কথা সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মইনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সিরামিক পণ্য প্রস্তুত করতে কারখানায় ২৪ ঘণ্টাই নির্দিষ্ট মাত্রায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ থাকতে হয়। গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি হলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় থাকা পণ্য নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি বলেন, “বিগত বছরগুলোতে প্রয়োজনীয় গ্যাসের চাপের অভাবে সময়মত পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় বিশ্ববাজারে নামি-দামি কোম্পানি আমাদের থেকে অর্ডার বাতিল করেছে।”
বিসিএমইএ বলছে, প্রায় এক বছর ধরে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী ও ময়মনসিংহ জেলার ২২ থেকে ২৫টি সিরামিক তৈজসপত্র, টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যার, সিরামিক ব্রিকস কারখানায় তীব্র গ্যাস সংকটে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
সিরামিক কারখানায় গ্যাসের চাপ প্রায় শূন্যে নেমে আসায় এসব কারখানায় দৈনিক ২০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এছাড়া গ্যাস সংকটের কারণে নিবন্ধিত ৫০টির বেশি সিরামিক কোম্পানি তাদের বিনিয়োগ স্থগিত করেছে এবং নতুন স্থাপিত পাঁচটি কারখানা উৎপাদনে যেতে পারছে না বলেও দাবি করা হয়।
মইনুল ইসলাম বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক ধাপে গ্যাসের দাম তিনগুণ বাড়ানো হয়েছিল। তবে দাম বাড়লেও গ্যাসের সরবরাহ আজও ঠিক হয়নি।
“সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, সরকার গ্যাসের দাম আরেক দফায় গড়ে ১৫২ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এটি করা হলে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় আরও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বাড়বে।”
এতে সিরামিক শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এতে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ধীরে ধীরে রুগ্ন শিল্পে পরিণত হবে। শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাই হবে, বেকারত্ব বাড়বে। সময়মত ব্যাংক ঋণ পরিশোধের ব্যর্থতায় ঋণখেলাপি বৃদ্ধি পাবে। এটি সরকারের শিল্পবান্ধব নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিসিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. মামুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন, সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম এবং পরিচালক রাশীদ মাইমুনুল ইসলাম ও ফারিয়ান ইউসুফ।
আরও পড়ুন