খোলা বাজারে আবারও ডলারের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
Published : 30 Aug 2023, 09:55 PM
আবারও দর বাড়তে থাকার মধ্যে নির্ধারিতের চেয়ে খোলা বাজারে অতিরিক্ত দরে ডলার বিক্রির অভিযোগে সাত মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
একইসঙ্গে ১০টিকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।
বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, অ্যাসোসিয়েশনের নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দরে ডলার বিক্রি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে বিক্রি সংক্রান্ত তথ্য ভুল দেওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এসব মানি চেঞ্জারের বিরুদ্ধে লাইসেন্সের শর্ত ভেঙে বিদেশি মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংকে না পাঠানো, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন মানি চেঞ্জার মনিটরিং সিস্টেমে ভুল তথ্য প্রদান এবং মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নির্দেশনা না মেনে নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি মূল্যে বিদেশি কেনাবেচার অভিযোগের তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
লাইসেন্স স্থগিত হওয়া এক্সচেঞ্জগুলো হল- ইয়র্ক মানি এক্সচেঞ্জ, জামান মানি চেঞ্জিং হাউজ, জেনি মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, মার্সি মানি এক্সচেঞ্জ কো. লিমিটেড, বেঙ্গল মানি এক্সচেঞ্জ ও জেবি মানি এক্সচেঞ্জার লিমিটেড।
যেসব মানি চেঞ্জারের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে সেগুলো হল- নিউ প্রাইম মানি চেঞ্জার লিমিটেড, উত্তরা মানি চেঞ্জার, মিসা মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, জামান মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, পাইওনিয়ার মানি এক্সচেঞ্জ, বুড়িগঙ্গা মানি এক্সচেঞ্জ প্রা. লিমিটেড, স্কাফ মানিচেঞ্জার, হযরত খাজা বাবা মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র লিঃ, গ্লোরী মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ও মাতৃক মানি চেঞ্জার।
এ তালিকায় মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের দুই নেতার প্রতিষ্ঠানও রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে ২০২২ সালের ১ অগাস্ট ডলারের বিনিময় মূল্য বাড়াতে ‘কারসাজি’সহ বিভিন্ন অভিযোগে তিন মানি এক্সচেঞ্জের লাইসেন্স স্থগিত এবং ১১টির বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
৩ মানি এক্সচেঞ্জের লাইসেন্স স্থগিত, ১১টির বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ
মানি এক্সচেঞ্জে নগদ ৫০ লাখ টাকার বেশি নয়
ডলারে অনিয়ম: ৮০ মানি চেঞ্জারে গিয়ে ৪২টিকে ‘শো কজ’
গত বেশ কয়েকদিন থেকে আবারও ডলারের দর বাড়ায় অস্থিরতা শুরু হয়েছে মুদ্রা বাজারে। গত সপ্তাহ থেকে খোলা বাজারে দর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
বর্তমানে আন্তঃব্যাংকের সঙ্গে খোলা বাজারে ডলারের দামের ব্যবধান সাড়ে টাকা পর্যন্ত গিয়ে উঠেছে। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে আন্তঃব্যাংক ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার কেনাবেচার তথ্য দেওয়া হয়।
অপরদিকে মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম অনুযায়ী ১১৩ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি করতে পারবে। অথচ এগুলো প্রতি ডলার বিক্রি করছে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১৮ টাকায়।
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদা ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দর নির্ধারণ করে দিয়ে আসছে। রেমিটেন্স, রপ্তানি ও আমদানি পর্যায়ে ডলারের দর ঠিক করে দিলেও নগদ টাকায় কততে বিক্রি করবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয় না।
তবে ব্যাংক নগদে যে দরে ডলার বিক্রি করবে তার সঙ্গে সর্বোচ্চ দেড় টাকা বেশি দরে মানি চেঞ্জার প্রতিষঠান ডলার বিক্রি করতে পারবে বলে ওই সময় সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
বুধবার রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ওয়েবসাইটে নগদে ডলার বিক্রির দর ছিল সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা।
বাফেদার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এদিন এবি ব্যাংক নগদে ডলার বিক্রি করেছে সর্বোচ্চ ১১২ টাকা ও আইএফআইসি ১১২ টাকা।
২০২২ সালের মাঝামাঝিতে মুদ্রা বাজারের অস্থিরতার মধ্যে ডলারের রেকর্ড মূল্যের সুযোগ নিয়ে কারসাজি করার খবরে শতাধিক মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন অর্ধ শতাধিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছিল। তবে পরে শর্ত পূরণ করায় সবার লাইসেন্স ফিরিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।