৩ মানি এক্সচেঞ্জের লাইসেন্স স্থগিত, ১১টির বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

লাইসেন্স ছাড়াই বিদেশি মুদ্রা লেনদেন করছিল ১১টি এক্সচেঞ্জ, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2022, 02:35 PM
Updated : 1 August 2022, 02:35 PM

ডলারের বিনিময় মূল্য বাড়াতে ‘কারসাজি’, নগদ অর্থ লেনদেনের হিসাব সংরক্ষণ না করা এবং অনুমোদন ছাড়া একাধিক শাখা খুলে ব্যবসা করায় তিনটি মানি এক্সচেঞ্জের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আর লাইসেন্স ছাড়াই বিদেশি মুদ্রা লেনদেন করায় ১১টি এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।

সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে যেসব মানি এক্সচেঞ্জ বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন করছে, তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে…। কিন্তু যেসব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স না নিয়ে বিদেশি মুদ্রা লেনদেন করছে... তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।”

ফকিরাপুলের বিসমিল্লাহ মানি চেঞ্জার, পুরানা পল্টনের অঙ্কন মানি চেঞ্জার এবং নয়া পল্টনের ফয়েজ মানি এক্সচেঞ্জের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। তবে যে ১১টি এক্সচেঞ্জের বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর নাম বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত মানি এক্সচেঞ্জের সংখ্যা ২৩৫টি। এর মধ্যে ২০২টি প্রতিষ্ঠান ঢাকার মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল শিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠানই এখনো লাইসেন্স নবায়ন না করে ব্যবসা করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তারা সুযোগ পেলেই ডলারের দাম বাড়িয়ে দেয়।”

বিশ্ব বাজারের অনিশ্চয়তার জেরে ডলারের বাজার বেশ কিছুদিন ধরেই অস্থির। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা উদ্যোগর পরও খোলা বাজারে ডলারের বিনিময় হার গত ২৮ জুলাই ১১১ টাকা ছাড়িয়ে যায়, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

ডলারের দরে এই সংকটের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, এর পেছনে 'কিছু কারসাজি' চিহ্নিত করেছে সরকার। ওই সময়ই মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে অভিযান ‍শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেউ যাতে দাম বাড়ানোর জন্য ডলার মজুদ না করে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

গত সপ্তাহে দুই দিনে রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, বনান ও ধানমণ্ডি এলাকার ৩৩টি মানি এক্সচেঞ্জ পরিদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল। ১০টি দলে ভাগ হয়ে ঢাকার কয়েকটি অঞ্চলে থাকা অনুমোদিত মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে অভিযান চালান বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন তাদের সাথে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভিযান চলার মধ্যে সোমবারও খোলা বাজারে ডলার বিক্রি হয়েছে ১০৭ থেকে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সার মধ্যে। ক্রেতারা চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাচ্ছেন না। খোলা বাজারের পাশাপাশি ব্যাংকেও নগদ ডলার বিক্রি কমে গেছে।