ডলারের দামে 'কিছু কারসাজি' চিহ্নিত: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী বলেন, "আমরা দেখছি ইমপোর্ট করার প্রয়োজন, প্রাইস বাড়িয়ে সেটা করা হচ্ছে। এরই মাঝে আমরা এগুলো দেখা শুরু করেছি এবং এগুলো পেয়েছি।"

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2022, 02:00 PM
Updated : 27 July 2022, 02:00 PM

ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে 'কিছু কারসাজি' চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এর দাম বাড়িয়ে আমদানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "সরকার বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে এসব অনিয়ম চিহ্নিত করা ও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।"

কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর গত সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে ডলারের দাম আবারও বাড়তে শুরু করে। গত মঙ্গলবার এক লাফে ৬টাকা বেড়ে তা ১১২ টাকা হয়ে যায়। পরদিন বুধবার তা আবার ১০৮ টাকায় নেমে আসে।

ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার কী উদ্যোগ নিচ্ছে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, "ডলারের দাম কারা বাড়াচ্ছে, কী উদ্দেশ্য আছে আমি জানি না। ইমপোর্ট পর্যায়ে কিছু অব্যবস্থাপনা ছিল। সেগুলো আমরা হাতে নিচ্ছি।

"দায়িত্ব নিয়েই বলছি যে, যাতে করে এগুলো না ঘটে সেজন্য আমরা টুলসগুলো ব্যবহার করব।"

ডলারের দাম নিয়ে কোনো ধরনের 'কারসাজি' হলে সেটা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানান মুস্তফা কামাল।

"মার্কেট ডিমান্ড অনুযায়ী ডলারের সাপ্লাই দিতে হবে এটা ঠিক আছে। কিন্তু যদি আর্টিফিসিয়াল ওয়েতে যদি কিছু করা হয়, ওই পর্যায়ে যদি নিয়ে যাওয়া হয়, ইন দ্যাট কেস আমরা নিয়ন্ত্রণ করব। সরকারের বিভিন্ন মেশিনারিজ আছে।"

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা দেখছি ইমপোর্ট করার প্রয়োজন, প্রাইস বাড়িয়ে সেটা করা হচ্ছে। এরই মাঝে আমরা এগুলো দেখা শুরু করেছি এবং এগুলো পেয়েছি। প্রাইস বাড়িয়ে ইমপোর্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

"যখন বাধা দেওয়া হয়, তখন এক ব্যাংক থেকে সরিয়ে অন্য ব্যাংক থেকে এলসি খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এগুলো সঠিক নয়। এগুলো আমরা ব্যবস্থা নেব যাতে করে এগুলো করতে না পারে।”

আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলেও আশা করেন অর্থমন্ত্রী। এক্ষেত্রে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে আবারও উল্লম্ফন ঘটবে বলে আশা করেন তিনি।

“যেই যেই খাত থেকে ডলার আসার কথা সেই সেই খাত থেকে পাচ্ছি। এখন ব্যয় বা খরচের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মেশিনারি, ‘র’ মেটেরিয়ালস, গম বাহির থেকে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।

"এগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয়, সে পরিমাণ অর্থ আমাদের হাতেই আছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন- আমাদের কী পরিমাণ অর্থ এক বছরে লাগবে।

"অর্থগুলোর সোর্স হচ্ছে এক্সপোর্ট। নেট এক্সপোর্ট আমাদের পক্ষেই আছে। রেমিটেন্স আমাদের সবচেয়ে বড় খাত।"

মুস্তফা কামাল জানান, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার। পরের বছর ২০২১-২২ অর্থবছরে এসেছে ২১ বিলিয়ন ডলার, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, "এবছর আমরা বিশ্বাস করি রেমিটেন্স অনেক বাড়বে। কারণ এরই মাঝে প্রচুর শ্রমিক ভাই -বোনেরা বিদেশে গেছেন। কোভিড পিরিয়ড পার হওয়ার পর তারা গেছেন।

"এখন তারা সেটেল হবে এবং রেমিটেন্স অর্জন করে দেশে পাঠাবে। রেমিটেন্স এবং এক্সপোর্টের মাধ্যমে আমাদের ডলারের চাহিদা পূরণ হবে।"

আরও খবর:

Also Read: ডলারের দরে উল্লম্ফন, খোলা বাজারে কিনতে লাগছে ১১১ টাকা

Also Read: খোলাবাজারে ডলারের দাম ১০২ টাকার বেশি

Also Read: ডলার কিনতে লাগবে আরও টাকা