দুটি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।
Published : 02 Aug 2022, 11:12 PM
খোলা বাজারে ডলারের দর উঠা-নামা ও সরবরাহ সঙ্কটের কারণ বের করতে মানি চেঞ্জারগুলো পরিদর্শনের পরিধি বাড়িয়েছ বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই পর্যন্ত ৮০টি মানি চেঞ্জারে অভিযান চালিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
এর মধ্যে ৪২টিতে অনিয়ম পেয়ে সেগুলোকে কারণ দর্শানোর (শো কজ) নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।
এ আগে সোমবার ৩টি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিতের কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার আরও দুটি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিতের কথা বলেছেন সিরাজুল। তবে প্রতিষ্ঠান দুটির নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি।
পরিদর্শনের পরিধি বাড়ানোর বিষয়টি জানিয়ে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে এ পর্যন্ত ৮০টি বৈধ মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে। নিয়ম না মেনে ব্যবসা পরিচালনা করা এবং ডলার কেনা বেচায় অনিয়ম করায় ৪২টি প্রতিষ্ঠানকে শো-কজ করা হয়েছে।”
রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতার মধ্যে ডলারের দাম বাড়ছে। বাংলাদেশে খোলা বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে ‘কিছু কারসাজি’ চিহ্নিত করার কথা বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এরমধ্যেই ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কয়েকদিন ধরেই চলছে অভিযান।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন অভিযানের খুব একটা প্রভাব পড়েনি খোলা বাজারে ডলারের দরের উপর। মঙ্গলবারও ১০৭ থেকে ১০৭.৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে প্রতি ডলার। আগের দিন দর উঠেছিল ১০৮.৫০ টাকায়।
অন্যদিকে ব্যাংকেও নগদে ডলারের দর ১০৮ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইস্টার্ন ব্যাংক ১০৮ টাকা, এনআরবি ব্যাংক ১০৯ টাকা ও সিটি ব্যাংক ১০৭ টাকায় ডলার বিক্রি করছে।
অস্থির ডলার বাজারে সহায়তা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মঙ্গলবারও ৭ কোট ৯০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে, ৯৪ দশমিক ৭০ টাকা দরে।
দিন শেষে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বা বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি ৩৯ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার ছিল বলে নিশ্চিত করেন সিরাজুল ইসলাম।
অবৈধদের তালিকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে
ঢাকা ও বাইরের বিভিন্ন এলাকায় থাকা শপিং কমপ্লেক্স ও বাজারে প্রতিষ্ঠান খুলে অনুমতি ছাড়া ডলারের ব্যবসা করছে যারা, তাদের একটি তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়েছে মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল শিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মৌসুমী ও অবৈধভাবে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা পরিচালনা করায় আমরা বৈধরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
“আমরা রাজধানী ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার কোথায় কোথায় অবৈধ কেনা-বেচা হয়, তার একটি তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে দিয়েছি।”
সেই তালিকায় দেখা যায়, রাজধানীর শ্যমলী স্কয়ার, আশকোনা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, উত্তরা রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স, এস বি প্লাজা, এইচ এম প্লাজা, উত্তরা টাওয়ার, গুলশান-১ ডিসিসি মার্কেট, গুলশান-২ ল্যান্ডমার্ক ভবন, ধানমন্ডি রাপা প্লাজা, মিরপুর-১০ এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।
ঢাকার বাইরে সিলেটের সুরমা মার্কেটের ৫০টির মতো প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে ‘অবৈধদের’ ওই তালিকায়।
চট্টগ্রামের গরিবুল্লাহ শাহ বাজার, রিয়াজ উদ্দিন বাজার ও আগ্রাবাদ যাদুঘর এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামও রয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রা কেনা-বেচা করতে সারাদেশে ২৩৫টি প্রতিষ্ঠান মানি চেঞজার হিসেবে লাইসেন্স নিয়ে কাজ করছে।