সিইসি বলেন, “সংঘাত পরিহার করে সমাধান অন্বেষণ করুন। সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা ও সমাধান অসাধ্য নয়।”
Published : 15 Nov 2023, 06:13 PM
আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত, তা বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। তার তিন সপ্তাহ পর হবে ভোটগ্রহণ।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার জন্য ১৪ দিন সময় দেওয়া হয়েছে এবং প্রচারের জন্য ১৯ দিন সময় রয়েছে। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচার শেষ করতে হয়। অর্থাৎ, ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ থাকবে।
নির্বাচন নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবিরে মতানৈক্যের মধ্যেই বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি।
তফসিল ঘোষণার ভাষণে সিইসি বলেন, “রাজনৈতিক মতানৈক্যের সমাধান প্রয়োজন। আমি সকল রাজনৈতিক দলকে বিনীতভাবে অনুরোধ করব, সংঘাত পরিহার করে সমাধান অন্বেষণ করুন। সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা ও সমাধান অসাধ্য নয়।”
এবার ৩০০ আসনেই ভোট হবে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে, ব্যালট পেপারে
৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোট চলবে
একাদশ সংসদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি, সেই সংসদের মেয়াদ আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে।
২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে অনুসারেই তফসিল ঘোষণা করছে নির্বাচন পরিচালনাকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি।
এমন এক সময় সিইসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেন, যখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন দুই শিবিরে বিভক্ত। সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সারা দেশে অবরোধের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার অবস্থানে অনড়।
সামনে কি হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে জনমনে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। দশ বছর আগের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্মৃতি ফিরে ফিরে আসছে।
২০১৪ সালে সেই নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে নির্বাচনে জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ভোটের ফলে তাদের ভরাডুবি হয়। সে সময় ‘আগের রাতে’ ভোট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে ফল প্রত্যাখ্যান করে দলটি। সংসদের মেয়াদের শেষ দিকে এসে তাদের নির্বাচিত এমপিরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এবার ২০১৪ সালের মত একই দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে রাজনীতিতে ফিরে এসেছে সহিংসতা। তাতে ডজনখানেক মানুষের প্রাণ গেছে। যানবাহনে অগ্নিংযোগ আর নাশকতার ঘটনায় জনমনে বাড়ছে শঙ্কা।
যুক্তরাষ্ট্র দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে নিঃশর্ত সংলাপের আহ্বান জানালেও বিবাদমান পক্ষগুলো তাতে সাড়া দেয়নি। বিএনপি এই সংলাপে কোনো ফায়দা দেখছে না। আর আওয়ামী লীগ বলেছে, এখন আর সংলাপের ‘সময় নেই’।
দেশের এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিরোধের মীমাংসা না করে তফসিল ঘোষণা না করার আহ্বান জানিয়েছিল কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তবে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে বলেছে, নির্বাচনের না আসার এখতিয়ার রাজনৈতিক দলের থাকলেও ইসির সামনে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের বিকল্প নেই।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পথে
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সে হিসাবে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন ভোটার। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। আর হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৫২ জন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। সে হিসেবে পাঁচ বছরে দেশে ভোটার বেড়েছে ১ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৬ জন।
এবারের নির্বাচনে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি এবং ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২।
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল আছে ৪৪টি। এসব নিবন্ধিত দল ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ নেন কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। চার নির্বাচন কমিশনার হলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান। তাদের মেয়াদে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনই হবে সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞ।
রোডম্যাপ ধরে তফসিল আগে-পরের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ থেকে ভোটের দিন ও ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ পর্যন্ত কাজের ফর্দ নিয়ে নামবে ইসি।
৬৪ জন জেলা প্রশাসক এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরের দুই বিভাগীয় কমিশনার মিলিয়ে মোট ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার এবার নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। ৪৯৫ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ৫৬ জন থানা নির্বাচন অফিসার, স্থানীয় সরকারের (ডিডিএলজি) ১৪ জন উপ-পরিচালক, ৮ জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সিটি করপারেশনের ১১ জন জোনাল এক্সিকিউটিভ অফিসার, ক্যান্টনমেন্টের ৫ জন এক্সিকিউটিভ অফিসার, ২ জন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং এক জন সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) মিলিয়ে মোট ৫৯২ জন থাকবেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার হিসেবে।
সিইসির আহ্বান
রাজনৈতিকগুলোকে সংলাপে বসে সমাধান খোঁজার তাগিদ দিয়ে সিইসি বলেন, বহুদলীয় রাজনীতিতে মতাদর্শগত বিভাজন থাকতেই পারে। কিন্তু মতভেদ থেকে সংঘাত ও সহিংতা হলে তা থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
“মতৈক্য ও সমাধান প্রয়োজন। আমি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সকল রাজনৈতিক দলকে বিনীতভাবে অনুরোধ করব, সংঘাত ও সহিংতা পরিহার করে সদয় হয়ে সমাধান অন্বেষণ করতে।”
নির্বাচনে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে আচরণ বিধি অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। ভোটারদের নির্ভয়ে কেন্দ্রে এসে স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ভোটকেন্দ্রে যে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ, অপচেষ্টা প্রতিহত করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সিইসি বলেন, “সকল উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে জনগণকে অনুরোধ করব।”
পাশাপাশি ভোটে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ‘সৎ, নিরপেক্ষ ও অবিচল থেকে’ আইন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
কার কী প্রতিক্রিয়া
তফসিল ঘোষণার পর আগের ঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।
ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তফসিল ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নির্বাচনের জন্য সংলাপ করতে হবে, এই কথা ইসির বক্তব্যে নেই। আর এটা থাকারও কথা না।
বিএনপির দিকে ইংগিত করে তিনি বলেন, "যে ট্রেন চলে গেল, সেই ট্রেন থামানোর ক্ষমতা তাদের নেই। তারা না উঠলে আমরা কি করব। নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না। নির্বাচনে ট্রেনে আপনি উঠবেন না, আপনি না উঠলে ট্রেন কি থেমে থাকবে?... নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে যাচ্ছে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে।
তফসিল ঘোষণার পর এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এ ‘নীল নকশার’ তফসিলে দেশে ‘কোনো দিন নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল ‘একতরফা’ নির্বাচনের বিরোধিতা করছে।
প্রধান দুই দলের এই বিরোধ মীমাংশার খুব বেশি আশা দেখছেন না নিরাপত্তা বিশ্লেষক আব্দুর রশীদ। তিনি বলেন, যদি সব রাজনৈতিক দল তফসিল গ্রহণ করত, তাহলে সবাই শঙ্কামুক্ত থাকত এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করা যেত।
“বর্তমান পরিস্থিতিতে বলা যায়, এই সংকট থাকবেই। এর ভেতরই নির্বাচন করতে হবে।”
অবশ্য এখনও সংলাপ সম্ভব বলে মনে করেন জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ-জানিপপ এর চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ।
তিনি বলেন, “মনোনয়ন জমাদানের আগের দিন পর্যন্ত সংলাপ হতে পারে।”
আর মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, “কীভাবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা যায়, সেটা চিন্তা করেই তো সংলাপ। কিন্তু শর্ত জুড়ে দিলে তো সংলাপ হবে না। হয়ত এখন যে পরিস্থিতি রয়েছে, সেই পরিস্থিতিতেই নির্বাচন হবে।”
এক নজরে তফসিলগুলো
সংসদ নির্বাচন | তফসিল ঘোষণার তারিখ | ভোটের তারিখ | তফসিল ঘোষণা থেকে ভোট পর্যন্ত সময় | ভোটের দিন |
প্রথম | ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি | ৭ মার্চ | ৬০ দিন | বুধবার |
দ্বিতীয় | ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর | ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি (পুনঃতফসিল) | ৫৪ দিন | রোববার |
তৃতীয় | ১৯৮৬ সালের ২ মার্চ | ৭ মে | ৪৭ দিন | বুধবার |
চতুর্থ | ১৯৮৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর | ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ | ৬৯ দিন | বৃহস্পতিবার |
পঞ্চম | ১৯৯০ সালের ১৫ ডিসেম্বর | ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি | ৭৮ দিন | বুধবার |
ষষ্ঠ | ১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর | ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি (পুনঃতফসিল) | ৫৫ দিন | বৃহস্পতিবার |
সপ্তম | ১৯৯৬ সালের ২৭ এপ্রিল | ১২ জুন | ৪৭ দিন | বুধবার |
অষ্টম | ২০০১ সালের ১৯ অগাস্ট | ১ অক্টোবর | ৪২ দিন | সোমবার |
নবম | ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর | ২৯ ডিসেম্বর (পুনঃতফসিল) | ৪৭ দিন | সোমবার |
দশম | ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর | ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি | ৪২ দিন | রোববার |
একাদশ | ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর | ৩০ ডিসেম্বর (পুনঃতফসিল) | ৪৬ দিন | রোববার |
দ্বাদশ | ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর | ৭ জানুয়ারি | ৫৩ দিন | রোববার |
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৫৩ দিন সময় দিয়ে তফসিল ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। এবার ইসিতে নিবন্ধিত দল রয়েছে ৪৪টি, তারাই দলীয়ভাবে ভোট করার সুযোগ পাবে।
প্রথম সংসদ নির্বাচনে ৬০ দিন সময় দিয়ে তফসিল হয়েছিল। তাতে ১৪টি দল অংশ নেয়।
৫৪ দিন সময় দিয়ে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট হয়। ২৯ দল তাতে অংশ নেয়।
তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪৭ দিন সময় দিয়ে তফসিল হয়। সেই নির্বাচনে অংশ নেয় ২৮টি দল।
চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে ৬৯ দিন সময় রেখে তফসিল হয়েছিল। মাত্র ৮টি দল সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।
নব্বইয়ের গণআন্দোলনের পর পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৭৮ দিন সময় দিয়ে তফসিল হয়েছিল। তাতে ৭৫টি দল অংশ নেয়।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে তফসিল দিয়ে তিনবার পরিবর্তন করতে হয়। অধিকাংশ দলের বর্জনের মধ্যে এতে অংশ নেয় ৪১টি দল।
সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ৪৭ দিন সময় দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ ৮১টি দল অংশ নেয় তাতে।
সবচেয়ে কম ৪২ দিন সময় দিয়ে অষ্টম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৫৪টি দল তাতে অংশ নেয়।
নবম সংসদ নির্বাচনেও ৪৭ দিন সময় নিয়ে ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অংশ নিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করায় কেবল নিবন্ধিত ৩৮টি দল অংশ নেয়।
দশম সংসদ নির্বাচনে ৪২ দিন সময় দিলে তফসিল ঘোষণা করে, দল অংশ নেয় ১২টি। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো ভোট বর্জন করে এবং ১৫৩ আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতা নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড হয়।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৪৬ দিন সময় দিয়ে তফসিল ঘোষণা করার পর এক সপ্তাহ পিছিয়ে নিয়ে পুনঃনির্ধারণ করা হয় ভোটের তারিখ। তাতে ৩৯টি দল ভোটে অংশ নেয়।