কাদের বলেন, "মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে আমাদের যেন কোন শঙ্কা বা উদ্বেগের কারণ না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি, বিশেষ করে চীন ও ভারতের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছি।"
Published : 07 Feb 2024, 04:43 PM
মিয়ানমারের চলমান সংঘাতের জেরে বাংলাদেশে নতুন করে আর একজন রোহিঙ্গাকেও অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ছয় বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখো রোহিঙ্গা এখন 'বোঝায়' পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, “তাদের নতুন করে আশ্রয় দেওয়ার মত উদারতা দেখানোর আর কোনো সুযোগ নেই।”
বুধবার রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন কাদের।
তিনি বলেন, "মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে আমাদের যেন কোন শঙ্কা বা উদ্বেগের কারণ না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি। বিশেষ করে চীন ও ভারতের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছি। বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হয়েছে। তারা বলেছেন, সংঘাতে যারা পালিয়ে এসেছে বাংলাদেশে, তাদেরকে দেশে (মিয়ানমারে) ফেরত নেওয়া হবে।
"এখন আর নতুন করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে দেব না। এর আগে উদারতা দেখিয়ে সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়েছিল। এখন সেই উদারতা দেখানোর সুযোগ নেই। তারা আমাদের জন্য একটা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য অনেক কমে গেছে। এ বোঝা আমরা আর কতদিন সইব?"
মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের মধ্যে গোলাগুলি কিছুটা কমলেও নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির আরো ৬৩ জন। এ নিয়ে গত চার দিনে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ মোট ৩২৭ জন পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাঁচতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশ অভিমুখে রোহিঙ্গাদের যাত্রা শুরু হয়। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। যেখানে আগে থেকেই ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। পরে সেই সংখ্যা বাড়তে থাকে।
এরপর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি বারবার আলোচনায় এলেও সেটি বাস্তবায়নের পথে এগোয়নি।
বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "আন্দোলনে ব্যর্থ ও নির্বাচনে না আসায় বিএনপি এখন চরম হতাশ। সেই হতাশা কাটাতে দলটির নেতারা এখন সরকারের বিরোধিতার করার সিদ্ধান্ত তারা নিয়ে ফেলেছে।”
সংবাদ সম্মেলনের আগে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লায়ে সেকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সেতু ভবনে সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্প চলবে আগামী ২০২৮ সালের ৩০ শে জুন পর্যন্ত।
“প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট না। সড়ক দুর্ঘটনা এবং ক্ষয়ক্ষতি কমানো যাচ্ছে না। সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। এখন থেকে আমি নিজেই তত্ত্বাবধান ও মনিটরিং করবে," বলেন কাদের।
অনিয়ম চোখে পড়লে ‘কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ’বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।
পুরনো খবর
গোলাগুলি কমলেও নতুন করে ৬৩ বিজিপির অনুপ্রবেশ