ডেকে নিয়ে ছিনতাইয়ের পর নদীতে ফেলে ব্যবসায়ী-কর্মচারীকে হত্যা

পুলিশ বলছে, পুরান ঢাকার এক ব্যবসায়ী ও তার কর্মচারীকে বরিশালে ডেকে নেন গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা, পরে মেঘনা নদীর মাঝে নিয়ে গিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে শ্বাসরোধ করে নদীতে ফেলে দেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2022, 09:18 AM
Updated : 29 Dec 2022, 09:18 AM

পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার এক প্লাস্টিক ব্যবসায়ী ও তার কর্মচারীকে অপহরণের পর টাকা ছিনিয়ে নিয়ে বরিশালে মেঘনা নদীতে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অপহরণের এক মামলায় তদন্তে নেমে চারজনকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) বিজয় বিপ্লব তালুকদার এ কথা জানান।

রাজধানীর মিন্টো রোডে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে জুয়েল শিকদার নামে এক প্লাস্টিক ব্যবসায়ীর বাবা চকবাজার থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেছিলেন। জুয়েল প্লাস্টিকের পুরনো বোতল কিনে রি-সাইক্লিং করে বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য বানানোর কাজ করতেন। তার সঙ্গে নিখোঁজ ছিলেন তার কর্মচারী মোর্শেদ আলম।

পরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় তাদের দুজনের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর জুয়েলের বাবা থানায় অপহরণের মামলা করেন। চকবাজার মডেল থানা পুলিশ ওই ঘটনা তদন্ত করে আসছিল।

পুলিশ কর্মকর্তা বিজয় বিপ্লব তালুকদার বলেন, এরই মধ্যে ২০ ডিসেম্বর ভোলার চরফ্যাশন থেকে মোর্শেদের লাশ উদ্ধার করা হয়। সেসময় তার পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে দাফনও করা হয়। দুদিন পর ২২ ডিসেম্বর ভোলার ইলিশা থেকে উদ্ধার করা হয় জুয়েলের মরদেহ।

পুলিশ জানায়, ব্যবসায়ী জুয়েলের মরদেহ শনাক্তের পর তদন্তে নেমে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে দেলোয়ার হোসেন মোল্লা ওরফে দেলু (৩৫), নুরুজ্জামান হাওলাদার (৪০), মো. আজিজ শিকদার (৩৪) ও হাফেজ চৌকিদার (৪৬) নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জুয়েল ও তার কর্মচারী মোর্শেদকে অপহরণ-হত্যার কথা ‘স্বীকার করেন’।

যুগ্ম কমিশনার বিজয় বিপ্লব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পরস্পরের যোগসাজসে ওই দুজনকে অপহরণ করে বরিশাল জেলার মেহেদীগঞ্জ উপজেলায় নিয়ে যায়। সেখানে ইঞ্জিনচালিত মাছ ধরার ট্রলারে তুলে মেঘনা নদীর মাঝে নিয়ে চোখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে তাদের কাছে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয়।

“তারা ওই দুজনের গলা চেপে ধরে, একপর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে গেলে মেঘনা নদীতে ফেলে দিয়ে চলে যায়।”

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নিহত ব্যবসায়ী জুয়েলের পূর্ব পরিচিত ছিলেন গ্রেপ্তার দেলোয়ার। লাভে বেশি পরিমাণ প্লাস্টিক কাঁচামাল দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে জুয়েলকে বরিশালে যেতে বলেছিলেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী টাকা ছিনতাই করে তাদের নদীতে ফেলে দেন।

পুলিশ জানায়, দেলোয়ার প্লাস্টিকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন, তবে কৌশলে ব্যবসায়ীদের ডেকে নিয়ে টাকা লুটপাট করে নদীতে ফেলে দিতেন। এ ঘটনায় দেলোয়ার আকন নামে আরেকজন পলাতক রয়েছেন। তাকে ধরতেও পুলিশের অভিযান চলছে।