শাহজালালের হ্যাঙ্গারে বিমানের দুই উড়োজাহাজের ঠোকাঠুকির ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দুই বোয়িংয়ের সংঘর্ষের ঘটনায় সময়ে দায়িত্বে থাকা প্রত্যেককে কারণ দর্শানোর নোটিস দিতে তিনি বলেছেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ আসে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন সরকার প্রধান।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, এখন থেকে এটা ফিক্সড করে দিতে হবে। যেমন দুটো বিমান ধাক্কা লাগল। এখানে বিমান তো একা একা ধাক্কা লাগাতে পারে না, এখানে তো অনেকেই ডিউটি করে। এটা ওয়ার্ক আউট করে প্রত্যেকটা কাজের রেসপনসিবিলিটি ফিক্সড করতে হবে।
“ওই সময়ে ওই কাজে যারা রিলেটেড থাকবে, সবাইকে এটার জন্য দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে। এবং কীভাবে তাদেরকে কমপনসেট (ক্ষতিপূরণ) করতে হবে, এটা ফাইন্ড আউট করে কুইকলি ব্যবস্থা নিতে হবে।”
সর্বশেষ গত ২৬ জুন রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিমানের একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারকে হ্যাঙ্গারে ঢোকানোর সময় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা বিমানেরই আরেকটি বোয়িং ৩৭৩ উড়োজাহাজের সঙ্গে ঠোকাঠুকি হয়। এতে ৭৩৭ উড়োজাহাজের বাম ডানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ড্রিমলাইনারটির ডান ডানাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “ধরেন ওই দিন ধাক্কা খেলো। যারা এর সাথে জড়িত, একজন দুজন তো আর জড়িত না। একজন পুশ করে একজন পাইলট থাকে বা গার্ড থাকে ও ক্লিয়ারেন্স দেয়, ট্রাফিকে যারা থাকে তাদের সবাইকেই শোকজ করতে বলা হয়েছে।”
হ্যাঙ্গারে এমন ঠোকাঠুকি সাম্প্রতিক সময়ে আরও ঘটেছে।
গত ১০ এপ্রিল দুপুরে বিমানের একটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ হ্যাঙ্গারের ভেতরে ঢোকানোর সময় ভেতরে থাকা আরেকটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তাতেও রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থার দুটো উড়োজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সেই সময় দায়িত্বে অবহেলার জন্য বিমানের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়। তারা হলেন- বিমানের মুখ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ বদরুল ইসলাম, প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম, সৈয়দ বাহারুল ইসলাম ও সেলিম হোসেন খান এবং জিএসই অপারেটর মো. হাফিজুর রহমান।
এরপর গত ৪ জুন বিমানের দাঁড়িয়ে থাকা একটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজে বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস বাংলার একটি ব্যাগবাহী ট্রলি এসে ধাক্কা দিলে উড়োজাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তারপর গত ১৬ জুন বিমানের একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ যাত্রী নামানোর পর অঘটনের শিকার হয়। নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডিং ব্রিজের সঙ্গে উড়োজাহাজের দরজার সংযোগ না খুলেই সেটি পার্কিংয়ে নেওয়ার জন্য ধাক্কা (পুশব্যাক) দিতে শুরু করেন রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত কর্মীরা। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি জানালেও বিমান কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি করে।
রুয়ান্ডার সঙ্গে বিমান চলাচল
আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় আকাশ পথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন সংক্রান্ত একটি চুক্তির খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশ ও রুয়ান্ডার মধ্যে স্বাক্ষরের লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল সংক্রান্ত চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটা বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় নিয়ে এসেছে।
“এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলা হয়েছে যে এটার অনুমোদন দেওয়া হলো। এটার ইকোনোমিক সাইডটা আরও ভালো করে দেখে তারপরে আমদের কী কী বেনিফিট আসবে সেটা ভালো মতো বিবেচনা করে তারপর করতে বলা হয়েছে।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “রুয়ান্ডা থেকে সাউথ আফ্রিকা, কেনিয়া বা নাইজেরিয়াতে বা যেখানে আমাদের লোকজন আছে বা ফোর্স আছে, সে সব জায়গায় যোগাযোগের কী সুবিধা হবে, এগুলো দেখে নিতে বলা হয়েছে।”