মোখা: ক্ষয়ক্ষতি কমের আশা নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে লাখো মানুষ

কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা; সবশেষ পূর্বাভাস বলছে, সকাল ৯টা থেকে ৩টায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

মঈনুল হক চৌধুরী শাহরিয়ার নোবেলবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2023, 07:58 PM
Updated : 13 May 2023, 07:58 PM

আরেকটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের ঝাপটায় সাজানো সংসার, বসতবাড়ি তছনছ হয়ে পড়া আর ভেসে যাওয়ার আতঙ্কের মুখে আগেভাগেই এবার তারা পাড়ি জমিয়েছেন নিরাপদ আশ্রয়ে দূরের স্বজনদের কাছে; যারা নিরুপায় তারা গেছেন আশ্রয় কেন্দ্রে, সাইক্লোন সেন্টারে।

ঘরবাড়ি ছেড়েছেন যারা সবকিছু নিতে পারেননি, সে উপায়ও নেই। তবুও উপকূলের এসব বাসিন্দা জরুরি ও সহায় সম্বলের কিছুটা আর গবাদি পশুকে সঙ্গী করে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা ধেয়ে আসার আগেই নিরাপদ দূরত্বে ছুটে গেছেন।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার আগের দিন শনিবার দিনজুড়ে উপকূলের বাসিন্দাদের ছুটোছুটির এমন চিত্র দেখা গেছে।

মহাবিপদের সংকেত দিয়ে বঙ্গোপসাগরে তৈরি এ ঘূর্ণিবায়ু এগিয়ে আসার আগেই এর প্রভাব যে শুধু উপকূলজুড়ে দেখা যেতে শুরু করেছে তা নয়, দেশজুড়েই এর প্রভাব পড়েছে।

ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর আশা নিয়ে আর প্রাণ বাঁচাতে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ছুটে আসা উপকূলের বেশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষগুলোই শুধু গাদাগাদির কষ্ট আর অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তা নয়; অনেক দূরের জেলার কিংবা দেশের মধ্যভাগের মানুষও ভোগান্তিতে পড়েছেন মোখার প্রভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই।

তাপদাহের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগাম প্রস্তুতির কারণে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকট দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। লোড শেডিংয়ে ঘরে কষ্ট পোহানোর পাশাপাশি কারখানায় উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। নৌ ও বিমান চলাচল বন্ধ হওয়ায় অনেকের যাত্রার সূচিতেও বদল আনতে হয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতেই তীরের আরও কাছে এগিয়ে আসায় মোখার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। রাত দুইটার দিকে উপকূলে বাতাসের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে জোয়ারের পানি ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে।

রাত ২টার একটু পরে কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের বাসিন্দা মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাত দুইটার পর থেকে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিও ঝরতে শুরু হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর রাত আড়াইটার পর সবশেষ বুলেটিনে বলছে, মোখার অগ্রভাগের প্রভাব চট্টগ্রাম ও বরিশালের উপকূলে পড়তে শুরু করেছে। এটি রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

বারবার ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে থাকা বাংলাদেশ মাস আটেক আগে গত অক্টোবরেও আরেক ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর মুখে পড়েছিল।

সেটি যখন আঘাত হানে তখন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সব হারিয়ে ক্ষতির মুখে পড়া চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সাগর তীরের আকমল আলী বেড়িবাঁধের জেলে পল্লীর পরিবারগুলো এবার শুরু থেকেই সতর্ক। আবারও দুযোর্গে সব খোয়ানোর বদলে জীবিকার সম্বল জালসহ যতটুকু পারা যায় সকাল থেকে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।

শুধু চট্টগ্রামের এ উপকূল নয়, জেলার অন্যান্য উপকূলীয় এলাকা, কক্সবাজার, প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন, টেকনাফসহ মোখার মহাবিপদ সংকেতের মধ্যে থাকা জেলাগুলোর উপকূলের বাসিন্দারা ভিটে মাটি ছেড়েছেন দিনের বেলাতেই। প্রশাসনের তোড়জোড়ের মধ্যে কষ্ট হবে জেনেও ঠাঁই নিয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে।

আগের দু:সহ অভিজ্ঞতা থেকেই রাতের আতঙ্ক মাথায় নিয়ে নিজেদের বসতবাড়িতে থাকতে চাননি তারা। কেননা   প্রায় পাঁচশ’ কিলোমিটার ব্যসের প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা’র অগ্রভাগের প্রভাব উপকূলে রাতেই কিছুটা পড়তে শুরু করেছে।

অতি প্রবল এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়া বইছে, বৃষ্টি হচ্ছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের পাশাপাশি অদূরবর্তী দ্বীপ-চরাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের প্রবণতাও বেড়েছে।

সবশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকা মোখা রোববার সকালের ভাগে আঘাত হানবে। এসময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের চোখ এর ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৯০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার আকারে ২১০ কিলোমিটারে উঠতে পারে।

রাতে অতিপ্রবল এ ঘূর্ণিঝড় পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূল থেকে ৪১০ কিলোমিটারের মধ্যে।

সুপার সাইক্লোন না হলেও অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূল অতিক্রমের সময়ই ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন রেখে যাবে।

এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে শনিবার দুপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আবহাওয়াবিদ মো. আবুল কালাম মল্লিক বলেছিলেন, “এটি (মোখা) সিডরের মতোই শক্তিশালী। “প্রায় সিডরের সমতুল্য গতিবেগ নিয়ে সে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। তবে পার্থক্য হলো সিডর বাংলাদেশের মাঝ বরাবর দিয়ে গিয়েছিল, মোখা পাশ দিয়ে যাচ্ছে।”

ভয়ের বিষয়গুলো আঁচ করতে পেরে আগেভাগেই সচেতনতার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছি বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ।

ইতোমধ্যে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারির পর ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত রয়েছে। আর ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত রয়েছে মংলা সমুদ্রবন্দরে।

ঘূর্ণিঝড় মোখায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেন্ট মার্টিন ও টেকনাফ। কারণ, ঘূর্ণিঝড়ের অর্ধেক অংশ বাংলাদেশ উপকূলের দিকে সেন্ট মার্টিনের পাশ ঘেঁষে অতিক্রম করবে আর অর্ধেক পাবে মিয়ানমার উপকূল।

চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় শনিবার মধ্যরাত নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব পড়তে থাকবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বুলেটিনে জানানো হয়।

দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছে সরকার।

কতদূরে মোখা

শনিবার রাত আড়াইটায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

এটি আরও উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিায়নমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

শনিবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়ে গেছে।

উপকূলে আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ

ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অতি ভারি বর্ষণ, ভূমি ধসসহ সার্বিক ঝুঁকির বিষয় বিবেচনায় রেখে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় আগাম সতর্কতা হিসেবে এ পর্যন্ত ১৫ জেলায় পৌনে তিন লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান।

এরমধ্যে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, চাঁদপুর, ফেনী, ঝালকাঠি, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী জেলা রয়েছে।

তিনি বলেন, “সময়ে সময়ে আমরা আপডেট নিচ্ছি ও সবাইকে জানাচ্ছি। সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে ইতোমধ্যে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত আশ্রিত লোক নারী, পুরুষ, শিশু, প্রতিবন্ধীসহ ২ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি।”

এরমধ্যে ১০ নম্বর মহাবিপদে থাকা কক্সবাজারে প্রায় দুই লাখ মানুষকে ছয় শতাধিক আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে।

প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে থাকা পর্যটকরা ও স্থানীয় অনেক মানুষ দ্বীপ ছেড়েছেন। শনিবার সকাল থেকে সাগর উত্তাল, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সেন্ট মার্টিন জেটি ঘাট এলাকা ফাঁকা। স্থানীয় প্রশাসন ইজিবাইকে করে মাইকিং করেছে শুক্রবার থেকেই।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ১ আকতার কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঝুঁকি বিবেচনায় লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার চেষ্টার পরও যারা অনীহা প্রকাশ করছে সবাইকে হোটেল ও রিসোর্টে নিয়ে আসা হচ্ছে। যারা আসতে চাচ্ছে না, তাদের জোর করে চেষ্টা চলছে।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, উপজেলায় মোট ১০২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত; এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় সেন্ট মার্টিনেই প্রস্তুত করা হয়েছে ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র। সেখানে সাত হাজার মানুষ আশ্রয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।

এদিকে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মাঝি আবু সুফিয়ান জানান, ঝড়ের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। তবে ভারি বর্ষণ হলে পাহাড়ধসে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাবসতি বিলীনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। বিশেষ করে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিতে থাকাদের মাঝে ভয়ভীতি কাজ করছে।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অনেকটা দুর্বল কাঠামো থাকায় এ ঘূর্ণিঝড়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। একই সঙ্গে ভারি বর্ষণে ভূমিধস, আকস্মিক বন্যার শঙ্কা বিবেচনায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, “ফ্লাশ ফ্লাড, ল্যান্ডস্লাইড হতে পারে ঝড়ের প্রভাবে ও ভারি বর্ষণে। সেক্ষেত্রে তাদের রি-লোকেট করার প্লান করেছি, যেখানে ভূমিধসের বেশি শঙ্কা থাকে। প্রতিটি ক্যাম্পে ১০০ জন করে পুরুষ-নারী সিপিপি ভলান্টিয়ার্স রয়েছে। ৩৩টি ক্যাম্পে ৩৩০০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত। সরকারি-বেসরকারিভাবে সংশ্লিষ্টদের সমন্বয় করে কাজ চলবে।”

সতর্কতা আর প্রস্তুতি

সরকার ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইইবি) ৬০তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মোখা আসছে। আমরা ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রগুলোকে প্রস্তুত রেখেছি ও ঝড়টি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।”

ঘূর্ণিঝড়ের সময় পানি জমে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার শঙকা থাকে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সুতরাং সেই সময়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। এই পদক্ষেপ (গ্যাস ও বিদ্যুৎ বন্ধ) সাময়িক দুর্ভোগ সৃষ্টি করলেও মানুষের জীবন রক্ষা পাবে। আমরা এই ধরনের ব্যবস্থা নিব ও নিচ্ছি।”

দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান সরকারের নেওয়া সব ধরনের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন সচিবালয়ে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা শেষে তিনি জানান, সবচেয়ে বিপদের সম্মুখীন সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অবস্থানরত মানুষের নিরাপত্তায় সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। সেখানে অবস্থানরত আনুমানিক ৮৫০০ মানুষকে সর্বোচ্চ জলোচ্ছ্বাস মাত্রার উপরে সুপার সাইক্লোন মোকাবিলায় সক্ষম ৩৭টি অবকাঠামোয় নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। 

অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবানের সংশ্লিষ্ট এলাকাতেও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, মোখার প্রভাবে টেকনাফ ও কক্সবাজারের জন্য সুনির্দিষ্ট করে দুই থেকে তিন মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, বরগুনা ও ভোলার জন্য দুই মিটারের কম উচ্চতার জন্য জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

তিনি জানান, সেন্ট মার্টিনের সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হলেও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের শতভাগ আনা সম্ভব হয়নি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হবে। এতে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের নেতৃত্বে সাড়ে চার হাজার স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সেখানে যেহেতু পাহাড়ের ওপর জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা নেই কিন্তু বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধস হতে পারে। এই আশঙ্কা মাথায় রেখে স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকতে বলেছি। যেহেতু রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১২ লাখ, সেহেতু তাদের সরিয়ে নিয়ে কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা আমাদের নেই।“

কতটা তীব্র মোখা, নজর কক্সবাজারের দিকে

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, সাগরে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থাকলেও স্থলভাগে উঠার সময় মোখার গতি কিছুটা কম থাকবে। উপকূল অতিক্রম করার সময় ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসসহ ১২০-১৬০ কিলোমিটার হতে পারে।

শনিবার শেষ রাতের দিকে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ উপকূল স্পর্শ করবে; আর পুরোটা অতিক্রমের সম্ভাবনা রোববার বিকালে। কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এজন্যে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরের জন্য ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত।

তিনি বলেন, “অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার তীব্রতার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ দেখছি। কিন্তু ল্যান্ডে উঠার সময় বা উঠলে পরে দ্রুত কমে যায়। তখন হয়ত সিভিয়ার সাইক্লোন থাকতে পারে বা এর কমবেশি হতে পারে। বাতাসের গতি ১০০-১৫০ কিলোমিটার থাকতে পারে।”

সিডরের তীব্রতার সঙ্গে মোখার তীব্রতার তুলনা করা যাবে না জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক জানান, মোখা দেশের শেষ সীমানা দিয়ে অতিক্রম করছে। এর অর্ধেক থাকবে মিয়ানমারের দিকে, অর্ধেক বাংলাদেশের দিকে। সিডরের পুরো বডিই বাংলাদেশের উপর দিয়ে গেছে। সেটার ক্ষয়ক্ষতি পুরোটাই গেছে বাংলাদেশের উপর আর আর মোখায় বাংলাদেশের এরিয়াটাই কম হবে টেকনাফের উপর ও আশপাশে।

ঘূর্ণিঝড় মোখার ব্যস ৫০০ কিলোমিটারের বেশি হওয়ায় এর অগ্রভাগের প্রভাব পড়বে অনেক এলাকায় বলে জানান তিনি।

দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, “ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে এটি সুপার সাইক্লোন হতে পারে, আমরা পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পেরেছি যে এটি সুপার সাইক্লোন হওয়ার শঙ্কা নেই।

পরীক্ষা স্থগিত

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় রোব ও সোমবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড, বরিশাল শিক্ষা বোর্ড, যশোর শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে কোনো এসএসসি পরীক্ষা হচ্ছে না।

ঘোষণা আসে উপকূলের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধেরও। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখায় সৃষ্ট পরিস্থিতি বিবেচনায় পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহ, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর শিক্ষা কেন্দ্র ও শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের লার্নিং সেন্টারসমূহ বন্ধ থাকবে। উপদ্রুত এলাকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে আলাদা এক বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও।

এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ, ভোগান্তি দেশজুড়ে

‘মোখা’ ধেয়ে আসার খবরে ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হওয়ার পর ঢাকাসহ সারাদেশে গ্যাস ও বিদ্যুত নিয়ে সংকট দেখা দিয়েছে।

শনিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে রান্নার চুলায় যেমন গ্যাস মিলছে না, তেমনই ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাচ্ছে শহরে। যদিও এতদিন গ্রামাঞ্চলে লোড শেডিং দিয়েও শহরকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের আওতায় রাখা হয়েছিল।

দুপুরের পর থেকেই ঢাকার মিরপুর, ধনিয়া, যাত্রাবাড়ী, কাজলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংকটের কথা জানিয়ে মাইকিং করা হয়েছে। ‘সময়ে সময়ে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করবে’ বলে জানিয়ে দেওয়া হয় সেই ঘোষণায়।

নারায়ণগঞ্জ শহরে শনিবার সারাদিন ১০ থেকে ১২ বার বিদ্যুৎ গেছে। দেশের আরও কয়েকটি জেলা শহর থেকেও একই ধরনের খবর এসেছে।

ঘূর্ণিঝড় 'মোখা’ ধেয়ে আসতে থাকায় ভাসমান টার্মিনাল দুটি শুক্রবার রাত ১১টার দিকে নির্ধারিত স্থান থেকে গভীর সমুদ্রের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে ওই দুটি টার্মিনাল থেকে এতদিন দৈনিক গড়ে যে ৭০০ এমএমসিএফ গ্যাস আসত তা বন্ধ হয়ে গেছে।

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালায়ের তরফে দুঃখ প্রকাশ করে এক বার্তায় বলা হয়, ঝড়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া টার্মিনাল দুটি দ্রুত পুনঃস্থাপন করে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে। তবে মধ্যবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম, মেঘনাঘাট, হরিপুর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গ্যাস চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ বা আংশিক চালু থাকতে পারে।

নৌ-বিমান-বন্দরের পরিস্থিতি

মোখার প্রভাব বাড়তে থাকায় নদীপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

সংস্থাটির উপ-পরিচালক মোবারক হোসেন মজুমদার শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় বলেন, “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

“ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ নদীপথে বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন সংকেত রয়েছে। তবে সার্বিক নিরাপত্তায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।”

ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মো. কবির হোসেন বলেন, “রাত সাড়ে ১০টা থেকে সব ধরনের লঞ্চ ও নৌযান সদরঘাট থেকে চলাচল বন্ধ রয়েছে।”

শনিবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রামের এ বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার তাসনীম হাসান।

ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী গতিপথ পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কক্সবাজার বিমান বন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখা’র কারণে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হওয়ায় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ শনি ও রোববার কক্সবাজার বিমানবন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরিস্থিতি উন্নতি সাপেক্ষে সোমবার থেকে পুনরায় বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণসহ সকল কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

শনিবার সকাল থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপে চট্টগ্রাম বন্দরের ‘অপারেশনাল কার্যক্রম’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান। জেটিতে অবস্থানরত সব জাহাজকে বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বন্দরের জেটিতে অপারেশনাল কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জেটিতে থাকা জাহাজগুলোকে বহির্নোঙ্গরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছি। সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

মোংলা বন্দরের জাহাজগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে; তবে বন্দরের পণ্য উঠানামা এখনও স্বাভাবিক রয়েছে।

শনিবার বিকালে মোংলা বন্দরের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মাদ শাহীন মজিদ বলেন, “মোংলা বন্দরে দেশি-বিদেশি আটটি জাহাজ রয়েছে। ঝড়ের প্রভাবের কথা চিন্তা করে সবগুলো জাহাজকে হারবাড়িয়া এলাকায় বহির্নোঙরে নিয়ে আসা হয়েছে।”

জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে তিন বিভাগে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে, যার ফলে ছয় জেলায় হতে পারে ভূমিধস। সেই সঙ্গে পার্বত্য নদী অববাহিকায় থাকা জেলাগুলোতে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের শনিবার সন্ধ্যা ৬টার ১৬ নম্বর বুলেটিনে বলা হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল এই তিন বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।

কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতায় বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, অতি ভারি বর্ষণে পার্বত্য অববাহিকার মুহরী, হালদা, কর্ণফুলী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, বাঁকখালি, নাফ নদীসমূহের পানি সমতল বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং এ নদী অববাহিকাসমূহের কিছু নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

এছাড়া আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার অনেক স্থান আকস্মিক বন্যা ও ভূমি ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও জানাচ্ছে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

এর বাইরে, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে অতিভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে কক্সবাজার সদর, রামু, টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার অনেক স্থানে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের কথাও বলছে সংস্থাটি।

Also Read: ঘূর্ণিঝড় মোখা আসছে কখন, কতটা তীব্রতা নিয়ে

Also Read: ঘূর্ণিঝড় মোখা: কক্সবাজারে আশ্রয়কেন্দ্রে লাখো মানুষ

Also Read: মোখা’র চোখ রাঙানিতেও ভয় নেই চারু বালাদের

Also Read: ঝুঁকিপূর্ণ সেন্ট মার্টিনের ‘সাড়ে ৫ হাজার লোক’ আশ্রয়কেন্দ্রে

Also Read: ঘূর্ণিঝড় মোখা আসছে, মিয়ানমারেও সরানো হচ্ছে উপকূলবাসীকে

Also Read: ঘূর্ণিঝড়ে কী করবেন

Also Read: ঘূর্ণিঝড়: কোন সংকেতে কী বোঝায়

Also Read: মৃত্যু আর ধ্বংস নিয়ে ঘূর্ণিঝড় এসেছে বার বার