ঘূর্ণিঝড়: কোন সংকেতে কী বোঝায়

ব্রিটিশ শাসনামলে তৈরি এই সংকেত ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক আধুনিক সংকেত ব্যবস্থা থেকে আলাদা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2019, 08:19 AM
Updated : 12 May 2023, 12:49 PM

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় দেশের তিন সমুদ্রবন্দরকে মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং মোংলা বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সনাতনী এ সংকেত ব্যবস্থা মূলত তৈরি করা হয়েছিল সমুদ্রগামী জাহাজ ও বন্দরের নিরাপত্তার জন্য। জনসাধারণের জন্য সতর্কবার্তার বিষয়টি সেখানে খুব একটা গুরুত্ব পায়নি তখন।

সংকেত প্রচার ও পতাকা উত্তোলন পদ্ধতি

  • ৪ নম্বর সংকেত: ১টি সংকেত পতাকা উত্তোলন। মৌখিকভাবে একে অপরকে জানাতে হবে।

  • ৫ থেকে ৭ নম্বর সংকেত: ২টি সংকেত পতাকা উত্তোলন। মেগাফোন এবং মাইক দিয়ে প্রচার; ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জরুরি সভা করতে হবে।

  • ৮ থেকে ১০ নম্বর সংকেত: ৩টি সংকেত পতাকা উত্তোলন। মেগাফোন, মাইক, হ্যান্ড সাইরেন, পাবলিক এড্রেস সিস্টেম ব্যবহার করে স্থানীয় জনগণকে জানাতে হবে।

সমুদ্রবন্দরে ঝড়ের সতর্ক বার্তা হিসেবে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত, ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত, ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত, ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেতের পর ৫, ৬ ও ৭ নম্বর বিপদ সংকেত; ৮, ৯ ও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়। সর্বশেষ ১১ নম্বর দিয়ে বোঝানো হয়- যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

পাশাপশি অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য রয়েছে ১ নম্বর নৌ সতর্ক সংকেত, ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত, ৩ নম্বর নৌ বিপদ সংকেত ও ৪ নম্বর নৌ মহাবিপদ সংকেত।

সমুদ্রবন্দরের জন্য সংকেতগুলোর মধ্যে ৫, ৬ ও ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের মাত্রা একই। আবার ৮, ৯ ও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতেরও মাত্রা এক। ঝড় কোন দিক দিয়ে যাবে তার ভিত্তিতে নম্বর আলাদা করা হয়, যদিও বিপদ সব ক্ষেত্রেই সমান।

এর ফলে সাধারণের মধ্যে অনেক সময় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষ মনে করে, সংকেত যত বেশি, বিপদ তত বড়। ফলে দ্রুততম সময়ে বিপদ সম্পর্কে সচেতন করার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।

এই সংকেত ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য গত আড়াই দশকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।

২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি সংকেত ব্যবস্থার সংস্কারের বিষয়ে সুপারিশ জমা দিয়েছিল, তাও পরে আর বাস্তবায়ন হয়নি।