কমিটিকে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল, সেই সময় শেষ হচ্ছে সোমবার।
Published : 24 Oct 2022, 11:24 AM
গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ‘অনিয়মের’ ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি তাদের কাজ গুছিয়ে এনেছে।
কমিটির আহ্ববায়ক ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, সোমবারের মধ্যেই তারা প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
“আমাদের তদন্ত কাজের সময় শেষ হচ্ছে আজ। ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নিয়েছি। সুপারিশসহ প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। আজই জমা দেওয়ার চেষ্টা করব।”
তবে সব কাজ করা সম্ভব না হলে আরও দুয়েকদিন সময় চেয়ে কমিশনে আবেদন করা হতে পারে বলে ইংগিত দেন এ কর্মকর্তা।
কমিটিকে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দেওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার গাইবান্ধায় গিয়ে তদন্ত কাজ চালান তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের মধ্যে সিসি ক্যামেরায় অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি।
এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল অনিয়মে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে তিন সদস্যের এই তদন্ত কমিটি করার ঘোষণা দেন।
কমিশনের অতিরক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটিতে ইসির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস সদস্য এবং ইসির যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী সদস্যসচিব হিসেবে আছেন।
এছাড়া কারিগরি কাজে সহায়তার জন্যে ইসি সচিবালয়ের আইডিইএ-২ প্রকল্পের স্কোয়াড্রন লিডার মো. শাহরিয়ার আলমও যুক্ত রয়েছেন কমিটিতে।
গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘মাত্রা অনুযায়ী’ শাস্তি দেওয়ার কথা সে সময় জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
তিনি বলেছিলেন, “নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাময়িক বহিষ্কার থেকে চাকরিচ্যুত করার মতো এখতিয়ার রয়েছে সাংবিধানিক সংস্থা ইসির। সেই সঙ্গে দুর্বৃত্তদের জেল-জরিমানার বিধানও রয়েছে। দেখতে হবে তারা কি অন্যায়গুলো স্বেচ্ছায় করেছে, না কোনো চাপে পড়ে করেছে। এছাড়া তদন্তের মাধ্যমে অপরাধের মাত্রা বুঝে শাস্তি নির্ধারণ হবে।”
আর সিইসি বলেছিলেন, “অপেক্ষা করেন। আমরা তদন্ত কমিটি করেছি; রিপোর্টটা আসুক। তারপরে আপনারা দেখেন আমরা কোনো পদক্ষেপ নিই কিনা। ওয়েট অ্যান্ড সি।”
কী কী দেখার কথা তদন্ত কমিটি
· পোলিং এজেন্ট বা ভোটার ছাড়া অন্য ব্যক্তিদের গোপনকক্ষে প্রবেশ, গোপনকক্ষে ভোটদান দেখা, ভোটারদের কোনো প্রার্থীকে ভোটদানে বাধ্য করা বা প্রভাবিত করা, মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে গোপনকক্ষের ছবি ধারণ– ইত্যাদি বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও দোষী/দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরা।
· দলীয় প্রতীক বা একই রঙয়ের পোশাক পরে পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব পালন; পোলিং এজেন্ট বা একইরকম পোশাক পরিহিত ব্যক্তিদের বিক্ষিপ্তভাবে ভোটকক্ষে বিচরণ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে গোপনকক্ষে প্রবেশ, ওই পোশাক উপঢৌকন হিসেবে বা অর্থের বিনিময়ে নেওয়া কিনা ইত্যাদি বিষয় উদ্ঘাটন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা।
· পোলিং এজেন্ট বা অবৈধ কোনো ব্যক্তি গোপন কক্ষে প্রবেশ করে নিজেই ভোটপ্রদান, ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন তা গোপন কক্ষে উঁকি দিয়ে বা ঢুকে দেখা, ভোটদানে বাধা দেওয়া, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ভোটকক্ষে ঢুকে নিজেই ভোট দেওয়া বা ভোটারকে প্রভাবিত করা অথবা পোলিং এজেন্ট নয়– এমন ব্যক্তি ভোটদানে ভোটারকে প্রভাবিত করার বিষয়ে দায়ী ব্যাক্তিদের শনাক্ত করা।
· নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের বিষয়ে সব পদক্ষেপ নেওয়ার পরেও এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটল, কারা দায়ী, তা চিহ্নিত করা।
· এসব বিষয়সহ প্রাসঙ্গিক অন্য কোনো বিষয় থাকলে তা পর্যালোচনা করে সুপারিশ করা
পুরনো খবর
উপ-নির্বাচনে অনিয়ম: গাইবান্ধায় ৬৮৫ জনের বক্তব্য শুনবে তদন্ত কমিটি
গাইবান্ধা-৫: ভোটের দিনের কেন্দ্র পরিস্থিতি জানল তদন্ত কমিটি
গাইবান্ধা-৫: চার প্রার্থী ও প্রশাসন তদন্ত কমিটিকে দিল বিপরীত ভাষ্য
গাইবান্ধা-৫: বিশৃঙ্খলার ভিডিও দেখিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা