তাপপ্রবাহময় এপ্রিল পার হল, মে মাসের শুরুতেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত।
Published : 02 May 2023, 08:37 PM
চলতি মাসে কালবৈশাখী ও তাপপ্রবাহের পাশাপাশি দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড়ের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মে মাসে বঙ্গোপসাগরে ১-২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর একটি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে।
গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ম্যানদাউস’ ভারতের তামিলনাড়ু ও পুদুচেরি উপকূলে আঘাত হানার পর দুর্বল হয়ে পড়ে, এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়েনি। ঘূর্ণিঝড় ম্যানদাউস ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রস্তাব করা নাম, আরবি ভাষার এ নামের অর্থ গুপ্তধনের সিন্দুক।
এ অঞ্চলে পরবর্তী ঘূর্ণিঝড় হলে তার নাম ঠিক রয়েছে মোখা (Mocha), এটা ইয়েমেনের দেওয়া নাম।
দেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঈশ্বরদীতে
আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেওয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান জানান, এ মাসে ১-৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি অথবা তীব্র ধরনের এবং ৩ থেকে ৫ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে।
সেই সঙ্গে চলতি মাসে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ১-২টি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এছাড়া উজানে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের ফলে উত্তরাঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বান্দরবানে ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ দিন চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, ফেনী, কক্সবাজার ও বান্দরবানের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের ৮ বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
তাপপ্রবাহ কেবল চট্টগ্রামে, ঝড়বৃষ্টি অধিকাংশ জেলায়
দুর্যোগ ঠেকাতে বাংলাদেশের কর্মপন্থা জানতে চায় অনেক দেশ: এনাম
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়- রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
এপ্রিলজুড়ে ছিল তাপপ্রবাহ
এপ্রিল মাসে ২৬ দিন ছিল তাপপ্রবাহময়, পাশাপাশি অন্তত ১৫ দিন ঝড়োহাওয়া ও কালবৈশাখীর দাপট ছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৬ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এ মাসে ৪ এপ্রিল-১২ এপ্রিল মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের এবং ১৩ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল তীব্র এবং ২৪ এপ্রিল ৩০ এপ্রিল মৃদু থেকে তাপপ্রবাহ বয়ে যায়।
৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলে।
এ মাসে ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১৭ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল ঈশ্বরদীতে।
এপ্রিলের ১-৬ এপ্রিল, ৮ এপ্রিল, ১৯-২৪ এপ্রিল, ২৬-৩০ এপ্রিল দেশে বিচ্ছিন্নভাবে বজ্রপাত ও কালবৈশাখীর দাপট ছিল। ২৪ এপ্রিল ঢাকায় সর্বোচ্চ ৭৪ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী বয়ে যায়।