কনস্টেবল বাদল হত্যায় ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড

নিহত বাদল মিয়া গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন চলাকালে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2023, 01:37 PM
Updated : 6 June 2023, 01:37 PM

দশ বছর আগে রাজধানীর মতিঝিলে পুলিশ কনস্টেবল বাদল মিয়া হত্যামামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, লাশ গুমের দায়ে তাদের আরও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৫ মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার এ রায় দেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রিপন নাথ ঘোষ, বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস, ইব্রাহিম খলিল ওরফে কসাই খলিল, রতন চন্দ্র দাস ও হুমায়ুন কবীর। 

দণ্ডিতদের মধ্যে বিশ্বজিৎ, ইব্রাহিম ও রতনকে রায় ঘোষণার আগে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

অপর দুই আসামি পলাতক। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, আসামিরা এতটা বেপরোয়া যে, পুলিশ সদস্যকে পর্যন্ত খুন করতে দ্বিধাবোধ করেনি।”

নিহত বাদল মিয়া গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন চলাকালে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন।

রায় ও মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি এলাকা থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার পকেট থেকে পাওয়া পরিচয়পত্রে দেখা যায়, তিনি পুলিশ কনস্টেবল। এ ঘটনায় মতিঝিল থানার এসআই আব্দুল লতিফ মামলা করেন। পরে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিদের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১২ সালের ৯ নভেম্বর মতিঝিলের এজিবি কলোনি এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হন রিপন নাথ, বিশ্বজিৎ চন্দ্র ও খোকন নাথ।

ওই ঘটনায় তাদের আত্মীয় রাজীব ও গোপাল চন্দ্র ঘোষের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়। আসামিদের সন্দেহ করেন, বাদল মিয়া পুলিশকে তথ্য দিয়ে সজিবকে গ্রেপ্তার করিয়েছেন।

এ ধারণা থেকে ২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আসামিরা বাদল মিয়াকে কর্তব্যস্থল শাহবাগ চত্বর থেকে অপহরণ করে অজ্ঞাত হলুদ ট্যাক্সিতে তুলে মতিঝিলের কালভার্ট রোড সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করেন। পরে লাশ টিঅ্যান্ডটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে রাস্তায় ফেলে যান।

মামলার তদন্ত শেষ করে ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক জিয়াউল আলম।

মামলার বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের ৩৪ সাক্ষীর মধ্যে ২৫ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত।