এ বিষয়ে কাজ শুরুর কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয় যখনই বলবে তখনই শুরু হবে’।
Published : 23 Nov 2022, 10:38 PM
মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে না পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার; সিদ্ধান্ত হয়েছে এমন ক্ষেত্রে বিচার কার্যক্রম ভার্চুয়ালি চালানোর।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের প্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয় নিরাপত্তায় ঝুঁকি রয়েছে এমন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আদালতে ভার্চুয়ালি হাজিরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার এ বিষয়ে কাজ শুরুর কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
ঢাকার আদালত পাড়া থেকে গত রোববার মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নেওয়ার প্রেক্ষাপটে এমন পদক্ষেপের বিষয়টি সামনে আসে।
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় এ দুই সদস্য প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে ছিলেন।
তাদের অন্য একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য আনা হয়; ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুযোগে তাদের সহযোগীরা পুলিশের মুখে স্পে ছুঁড়ে ও মারধর করে হাতকড়া পড়া দুই জঙ্গীকে ছিনিয়ে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
এ দুই দুর্ধর্ষ আসামির ছিনতাইয়ের পর সরকার নড়ে চড়ে বসে। আদালত পাড়ায় কড়াকড়ি, বিভিন্ন সীমান্তে নজদারি বাড়ানো, পুলিশের ১০ লাখ করে দুই জঙ্গির জন্য পুরস্কার ঘোষণা, জঙ্গিদের ডান্ডাবেড়ি ছাড়া আদালতে না পাঠানোর বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা জারি হয়।
এরমধ্যেই সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর এ ধরনের আসামিদের আদালতে হাজির না করে ভার্চুয়ালি বিচার কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
“অন্য আসামিদের জন্য নয়, শুধু মৃত্যুদণ্ড বা দণ্ডিত আসামিদের আদালতে না এনে ভার্চুয়ালি বিচার কার্যক্রমের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। তিনি একমত পোষণ করেছেন। আইন মন্ত্রণালয় যখনই বলবে তখনই শুরু হবে।”
জঙ্গি ছিনতাইয়ে ‘জড়িত’ একজন গ্রেপ্তার
জঙ্গি ছিনতাই: পুলিশের দুর্বলতা না অবহেলা?
আদালত প্রাঙ্গণে ‘পুলিশকে স্প্রে মেরে’ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি ছিনতাই
মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জনান, বিষয়টি বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুবই জরুরি। এটা হলে সবার জন্য ভালো হয়।
একই কথা জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবি মোশাররফ হোসেন কাজল। দুদকের এই আইনজীবী মনে করেন, এ আধুনিক ব্যবস্থা চালু হলে সবার জন্য ভালো হবে।
“আসামিদের সকল সুযোগ সুবিধা রেখে এ ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হলে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, এখানে কারও দ্বিমত থাকার কথা নয়।”
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আদালতে না পাঠিয়ে এ ধরনের আসামির ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিচারের কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে তারা কাজ শুরু করেছেন।
জঙ্গি ছিনতাই: পুলিশের দুর্বলতা না অবহেলা?
“বিচারক, আইনজীবি, আসামির কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে একটি গাইডলাইনের প্রয়োজন রয়েছে এবং এ বিষয়ে আইনের দিকগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তবে খুব শিঘ্রই এ ব্যাপারে কাজ শুরু হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌশলী আব্দুল্লাহ আবু মনে করছেন, একটি নীতিমালা তৈরি হওয়ার পর কাজ শুরু হতে পারে।