তার সঙ্গে আগে গ্রেপ্তার দুজনের ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক রয়েছে বলে পুলিশের ভাষ্য।
Published : 21 Apr 2024, 07:27 PM
জাল সনদ ও নম্বরপত্র তৈরির একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিন হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
রোববার বিকালে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন।
এদিন আসামিকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করে আসামিপক্ষ।
দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক দুই দিনের রিমান্ড আদেশ দেন বলে জানান আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জালাল উদ্দিন।
শনিবার উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরের রাজউক অ্যাপার্টমেন্ট থেকে সেহেলাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এরপর রোববার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের জাল সনদ, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র তৈরিতে জড়িত একটি চক্রের সঙ্গে সেহেলা পারভীনের টাকা-পয়সা লেনদেনের ‘প্রমাণ’ পাওয়া গেছে।
“এই চক্রটি গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজারের বেশি জাল সার্টিফিকেট মার্কশিট বানিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করেছে।”
সেহেলা ছাড়াও এ অভিযোগে আগে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়; তাদের তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পাঁচ হাজারের বেশি সনদ ও মার্কশিট বাণিজ্যের অভিযোগে গত ১ এপ্রিল কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ টি এম শামসুজ্জামান ও একই প্রতিষ্ঠানের চাকরিচ্যুত কর্মচারী ফয়সাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৫ এপ্রিল কুষ্টিয়া সদর এলাকা থেকে ‘গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটে’ পরিচালক সানজিদা আক্তার কলিকে প্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জালিয়াত চক্রের সঙ্গে ‘অর্থ লেনদেন’: কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী গ্রেপ্তার
সনদ বাণিজ্যের অভিযোগে কারিগরি বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট গ্রেপ্তার
কলির দেওয়া জবানবন্দিতে কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খানের স্ত্রীর নাম আসে বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন। পুলিশ এরপর শামসুজ্জামান, ফয়সাল ও কলির ব্যবহৃত ডিভাইস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গত বৃহস্পতিবার কামরাঙ্গীরচরের হিলফুল ফুযুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা ওরফে মোস্তাফিজুর রহমানকে এবং শুক্রবার যাত্রাবাড়ী এলাকার ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (মেডিকেল) পরিচালক মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুনকে (৪০) গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনের সঙ্গে শামসুজ্জামান ও সানজিদা আক্তার কলির ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক রয়েছে।
তাদের মধ্যে ‘অর্থ লেনদেন হত’ জানিয়ে হারুন বলেন, “সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামান সরকারি পাসওয়ার্ড, অথরাইজেশন ব্যবহার করে টাকার বিনিময়ে জাল সার্টিফিকেটগুলোকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করত, তাই ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকত না। এছাড়া তারা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে টাকা বিনিময়ের তথ্য আদান-প্রদান করত।”
এ চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও ২৫ থেকে ৩০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।