বঙ্গবাজারে এখনও ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিট কাজ করছে; সড়কগুলোতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
Published : 05 Apr 2023, 11:54 AM
অগ্নিকাণ্ডে ঢাকার বঙ্গবাজারের কয়েকটি মার্কেট ভষ্মীভূত হওয়ার পর একদিন পার হলেও এনেক্সকো টাওয়ারের আগুন নেভানোর কাজ শেষ হয়নি।
ওই ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ফায়ার সার্ভিসের ৩০ ইউনিট বুধবার সকাল থেকে ঘটনাস্থলে কাজ করছে। মই দিয়ে পঞ্চম থেকে উপরের তলাগুলোতে তারা পানি ছিটাচ্ছেন। আর নিচের তলাগুলো থেকে নামানো হচ্ছে আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া, পানিতে ভেজা কাপড়। সেগুলো বস্তায় ভরে সরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
বঙ্গবাজার ঘিরে আশপাশের সকল সড়ক দিয়ে যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। হাই কোর্টের সামনে, গুলিস্থান টিঅ্যান্ডটি মোড়, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কগুলোতে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ।
ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডের একদিন পরেও ঘটনাস্থলে ভিড় করে আছে উৎসুক জনতা। কাউকে কাউকে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে না পোড়া কাপড় বের করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। তাদের সামাল দিতে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরাও তৎপরতা রয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ডিউটি অফিসার রোজিনা খাতুন বুধবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তাদের ৩০টি ইউনিট ডাম্পিংয়ের কাজ করছে।
দেশের সবথেকে বড় কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজারে মঙ্গলবার সকাল ৬টায় আগুনের সূত্রপাত হলে বাতাসের কারণে দ্রুতই তা ছড়িয়ে পড়ে। একে একে আগুন নেভাতে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট। বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীও যোগ দেয় সেই কাজে, ছিল পুলিশ, র্যাব, আনসারও। পানি ছিটাতে নামে হেলিকপ্টারও।
সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার ঘোষণা দিলেও তারপরও বিভিন্ন স্থানে শিখা দেখা যাচ্ছিল। এমনকি রাতেও দুটি স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে, তা নেভাতে কাজ করছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন বঙ্গবাজারের মূল মার্কেটে রয়েছে চারটি ইউনিট- বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, গুলিস্তান ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও আদর্শ ইউনিট। টিন আর কাঠে নির্মিত এই মার্কেটে দোকানের সংখ্যা ২ হাজার ৩৭০টি। এগুলোর সবই এখন পুড়ে ছাই।
বঙ্গবাজারের উত্তর পশ্চিম কোণে সাততলা এনেক্সকো টাওয়ার, তার পূর্ব পাশে মহানগর কমপ্লেক্স মার্কেটও (পুলিশ সদর দপ্তর লাগোয়া) পুড়েছে। আগুন বঙ্গবাজারের পশ্চিম পাশের সড়কের অপর প্রান্তের দুটি মার্কেটেও ছড়ায়। এই কয়েকটি মার্কেট মিলিয়ে ৫ হাজারের মতো দোকান রয়েছে; তারও অধিকাংশ পুড়েছে।
ঈদ সামনে রেখে এসব দোকানে নতুন কাপড় তুলেছিলেন ব্যবসায়ীরা। কেউ নিজের সহায় সম্বল কিংবা ঋণ করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়েছে এসব ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন।
আগুন লাগার পর কিছু ব্যবসায়ী ঝুঁকি নিয়ে তাদের মালামালের কিছু বের করতে পেরেছিলেন। রাস্তায় স্তূপ করে রাখা কাপড়ের সেই বস্তাগুলো রাতভর পাহারা দেন তারা। সেইসঙ্গে পুলিশও কড়া নজর রাখে।
শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মালামাল চুরিরোধে এবং উৎসুক জনতার ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।
আরও পড়ুন-