৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
Published : 03 Apr 2023, 07:01 PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের লেখা ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন’ বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ‘ইতিহাস বিকৃতির’ অভিযোগ ওঠায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির পরিচালক অধ্যাপক ফকরুল আলমকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয় বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কমিটি ওই বইটা পর্যালোচনা করে দেখবে।
“এটা একটা একাডেমিক জায়গা, যে কোনো জিনিস বস্তুনিষ্ঠভাবে দেখতে হয়। যেহেতু একটা প্রশ্ন উঠেছে, তাই বিষয়টা বস্তুনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ রয়েছে।”
কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে উপাচার্য জানান।
বইয়ে ‘ইতিহাস বিকৃতির’ অভিযোগ, ঢাবি শিক্ষকের শাস্তি দাবি
বোঝার ভুলে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ: অধ্যাপক ইমতিয়াজ
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে একটি মতামত কলাম লেখেন। ওই লেখায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ইমতিয়াজের লেখা ২০০৯ সালে প্রকাশিত বইটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তোলেন।
অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ এবং একটি উচ্চ ক্ষমতার তদন্ত কমিটি গঠন করে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে রোববার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, বিচারপতি শামসুদ্দীনও তাতে যোগ দিয়েছিলেন।
তবে অধ্যাপক ইমতিয়াজ ১৪ বছর আগে লেখা তার ওই বই নিয়ে তোলা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ ধরনের অভিযোগে বিস্ময় প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেছেন, তার বইটি ভুলভাবে পড়া হয়েছে।
ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের
অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড : স্টেট ভার্সেস পারসন’ (২০০৯) বইয়ে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ‘ইতিহাস বিকৃতির’ নিন্দা জানিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
সোমবার বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “ড. ইমতিয়াজ জাতির পিতার দীর্ঘ সংগ্রাম, ৭ই মার্চের ভাষণ, মহান মুক্তি সংগ্রাম, গণহত্যা ইত্যাদি নিয়ে প্রশংসাসূচক কিছু সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও মন্তব্য করলেও পাশাপাশি এগুলো নিয়ে তিনি বেশ কিছু তির্যক, বিকৃত, অসত্য ও জাতীয় ইতিহাসের জন্য ক্ষতিকর মন্তব্য করেছেন, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, কুতর্ক উত্থাপন করে ইমতিয়াজ আহমেদ এই বইয়ে মনগড়া ও বিকৃত তথ্য লিখে অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন এবং এভাবে তিনি নিশ্চিতভাবেই ৭১ এর পরাজিত শক্তির দোসর হিসেবে কাজ করছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। দেশের আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিবৃতির মাধ্যমে সরকারের কাছে জোর দাবি জানায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ।”
এদিকে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ এবং একটি উচ্চ ক্ষমতার তদন্ত কমিটি গঠন করে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে রোববার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।