সংঘাতময় পরিস্থিতিতে শনিবার খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি সফর করেন তিন উপদেষ্টা।
Published : 21 Sep 2024, 10:16 PM
পাহাড়ে সংঘাতে আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার স্বার্থে প্রয়োজনে তাদের সামরিক হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলেছেন রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি সফর করা উপদেষ্টারা।
সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখতে গ্রাম-ইউনিয়ন-উপজেলা পর্যায়ে সব সম্প্রদায়ের মানুষকে অন্তর্ভূক্ত করে কমিটি গঠন করার কথাও বলেছেন তারা।
শনিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ ও পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা সংঘাতময় রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি সফর করেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবদুল হাফিজ তাদের সঙ্গে আছেন।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় আহতদের চিকিৎসা ও শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সকালে চুরির অভিযোগে মামুন নামে এক যুবক ‘পিটিয়ে হত্যা’র প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে বিক্ষোভ মিছিল বের করে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মিছিলের এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে লারমা স্কয়ারের দোকানপাটে আগুন দেয় একটি পক্ষ। তাতে ৬০ থেকে ৭০টি দোকান পুড়ে গেছে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ।
সংঘর্ষে সময় আহতদের খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়।
দীঘিনালার ওই ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে পুরো জেলায় আতঙ্ক তৈরি হয়। নাশকতা রোধে খাগড়াছড়ি পৌর শহর ও জেলা সদরে শুক্রবার বেলা ২টা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।
খাগড়াছড়ির সংঘাতের জেরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে আরেক পার্বত্য শহর রাঙামাটিতেও। সেখানে সংঘর্ষে একজন মারা যান। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। সেখানেও শুক্রবার সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের পর বেলা দেড়টা থেকে রাঙামাটি পৌর এলাকায়ও ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।
সংঘাতময় পরিস্থিতিতে শনিবার এই দুই পার্বত্য জেলা সফর করেন তিন উপদেষ্টা।
এর আগে শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর জনৈক ব্যক্তিকে ‘গণপিটুনি’ ও পরবর্তীতে তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান হামলা, আক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার গভীরভাবে দুঃখিত এবং ব্যথিত।”
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘাত, সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে সব বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং পার্বত্য তিন জেলার সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সমস্যা নিরসনে সরকার ‘আন্তরিকভাবে কাজ করে’ যাচ্ছে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি পরিদর্শনে যাবে বলে সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছিল।