আগামী ২৯ অগাস্ট প্রতিবেদন জমার নতুন দিন রেখেছেন বিচারক
Published : 30 Jul 2023, 03:13 PM
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলায় অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়েছে।
রোববার এ মামলার প্রতিবেদন জমার তারিখ ছিল। কিন্তু তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডির পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন তা জমা দিতে পারেননি। তাই ঢাকা মহানগর হাকিম আলী হায়দার আগামী ২৯ অগাস্ট প্রতিবেদন জমার নতুন দিন রেখেছেন।
বিচারকাজের ‘বিলম্ব হওয়ায়’ হতাশা প্রকাশ করে মামলার বাদী ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন রানা বলেন ‘জাস্টিস ডিলেইড জাস্টিস ডিনাইড’।
“তথ্যপ্রযুক্তি, ইন্টারনেট এবং শহর ও গ্রামের সবখানে সিসিটিভি ফুটেজ বিদ্যমান থাকার পরও হত্যা রহস্য উদঘাটনে মাসের পর মাস পেরিয়ে যাওয়া উচিৎ না। নিখোঁজের রাতে ফারদিনের অস্বাভাবিক মুভমেন্টের গতিপথের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহে তদন্ত সংস্থাগুলো কেন ব্যর্থ হচ্ছে, বা সময় ক্ষেপণ করছে তা বোধগম্য নয়।“
তিনি বলেন, “কারা অপহরণ ও হত্যা করল, সেটা উন্মোচনে সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আনার কোনো বিকল্প নেই।“
ফারদিনের লাশ উদ্ধার ও মামলা
বুয়েটের পুরকৌশলের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফারদিন (২৪) বিতার্কিক ছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে স্পেনের এক অনুষ্ঠানে তার যাওয়ার কথা ছিল।
তার এক মাস আগে গত বছরের ৪ নভেম্বর দুপুরে ঢাকার ডেমরার কোনাপাড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন ফারদিন। বাবা-মার বড় ছেলে ফারদিন কোনাপাড়ায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন।
ফারদিন বেরিয়ে যাওয়ার সময় মাকে বলে গিয়েছিলেন, পরদিন তার পরীক্ষা রয়েছে বলে রাতে বুয়েটের হলেই থাকবেন। পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফিরবেন।
কিন্তু পরদিন পরীক্ষায় তার অনুপস্থিত থাকার খবর জেনে খোঁজাখুজি করেও ছেলেকে না পেয়ে থানায় জিডি করেন নূরউদ্দিন রানা। তিন দিন পর ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে ফারদিনের লাশ পাওয়া যায়।
এরপর ১০ নভেম্বর নূরউদ্দিন রানা হত্যা মামলা করেন। তাতে আসামি করেন ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে, যার সঙ্গে ফারদিন দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত ছিলেন। তখন পুলিশ বুশরাকে গ্রেপ্তার করে, হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে।
পরে ফারদিন ‘আত্মহত্যা’ করেছেন জানিয়ে পুলিশ এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। তখন বুশরাকে জামিন দেয় আদালত।
গোয়েন্দা পুলিশের দেওয়া ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আপত্তি জানিয়ে ফারদিনের বাবা কাজী নুরউদ্দিন রানার ‘নারাজি’ আবেদন করেন। গত ১৬ এপ্রিল তা গ্রহণ করে ঢাকা মহানগর হাকিম শান্ত ইসলাম মল্লিক মামলাটি সিআইডিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদলে যায়। গত ৩ মে ঊর্ধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডির পরিদর্শক বেলায়েত হোসেনকে।
ডিবির প্রতিবেদন কী ছিল?
আগের তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গত ৬ ফেব্রুয়ারি।
সেখানে বলা হয়, নানা কারণে হতাশা থেকে ফারদিন আত্মহত্যা করেন। তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশও করা হয় সেখানে।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “স্পেনে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যাওয়ার বিমান ভাড়া সংগ্রহ করতে না পারা, ছোট দুই ভাইকে টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ জোগানোয় সংগ্রাম করতে হওয়াসহ নানা কারণে হতাশা থেকে ফারদিন আত্মহত্যা করেন।”
পুরনো খবর
ফারদিন হত্যা: প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে ২১ জুন
ফারদিনের মৃত্যু: সিআইডিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ
ফারদিনের মৃত্যু: মামলা নতুন তদন্ত কর্মকর্তার হাতে
ফারদিন হত্যা মামলা: ‘নারাজি’ দিতে সময়ের আবেদন বাবার
আত্মহত্যা করেন ফারদিন- উল্লেখ করে হত্যা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা
সেই রাতে ৪ স্থানে ঘোরেন ফারদিন, যাত্রাবাড়ী থেকে ওঠেন লেগুনায়: ডিবি
ফারদিন খুন হননি, আত্মহত্যা: ডিবি-র্যাব
ফারদিনের ‘আত্মহত্যা’: র্যাব পুলিশ ভালোভাবে বুঝেই বলেছে, বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী