ফারদিনের মৃত্যু: অবশেষে মুক্তি পেলেন বুশরা

মুক্তির পর বুশরাকে তার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম কারাগার থেকে নিয়ে যান।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2023, 09:54 AM
Updated : 10 Jan 2023, 09:54 AM

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় দুই মাস কারাগারে আটক থাকার পর জামিনে মুক্তি পেলেন তার বন্ধু আমাতুল্লাহ বুশরা।

মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি ছাড়া পান বলে জেলার ফারহানা আক্তার জানিয়েছেন।

ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার রোববার বুশরার জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে ফারদিন হত্যা মামলায় গত ১০ নভেম্বর বুশরাকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ফারহানা আক্তার বিডনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছালে তা যাচাই-বাছাই শেষে আমাতুল্লাহ বুশরাকে দুপুরে মুক্তি দেওয়া হয়।“

মুক্তির পর বুশরাকে তার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম কারাগার থেকে নিয়ে যান বলেও জানান ফারহানা আক্তার।

গ্রেপ্তারের পর পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে ১৬ নভেম্বর বুশরার জামিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে রাখার আদেশ দিয়েছিল আদালত। ৫ ডিসেম্বর হাকিম আদালতে বুশরার জামিন আবেদন আবারও খারিজ হলে তিনি জজ আদালতে আবেদন করেন।

ওই আবেদনের একমাস পর ৫ জানুয়ারি বুশরার জামিন শুনানি হয়। কিন্তু বাদী পক্ষের আইনজীবী সেদিন শুনানিতে ছিলেন না। সে কারণে রোববার তাকে শুনানি করার অনুমতি দেন বিচারক।

রোববার শুনানিতে বুশরার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী মোখলেসুর রহমান বাদল। ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন রানার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন হীরন।

ওইদিন ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার বুশরার জামিন মঞ্জুর করেন। পুলিশ এ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া পর্যন্ত তার জামিন বহাল থাকবে।

মামলার তদন্তকারী সংস্থাটি গোয়েন্দা পুলিশ এরই মধ্যে জানিয়েছে, ফারদিন খুন হননি, আত্মহত্যা করেছিলেন। আর তার মৃত্যুর সঙ্গে বুশরার কোনো ‘সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি’। সুতরাং আদালতে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

২৪ বছর বয়সী ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং ক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদকও ছিলেন ফারদিন।

তার বন্ধু আমাতুল্লাহ বুশরা পড়েন ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে রামপুরার বনশ্রী এলাকায় মেসে থাকতেন তিনি।

বছর পাঁচেক আগে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ফারদিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় বলে ফারদিনের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা জানিয়েছিলেন।

গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হওয়ার পর ৭ নভেম্বর বিকালে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করেছিল নৌ-পুলিশ৷

ফারদিন নিখোঁজ হওয়ার আগে তাকে সর্বশেষ রামপুরা এলাকায় বুশরার সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। সে কারণে রামপুরা থানাতেই একটি জিডি করেছিলেন ফারদিনের বাবা।

ছেলের লাশ পাওয়ার দুদিন পর ১০ নভেম্বর ভোরে তিনি রামপুরা থানাতেই একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, সেখানে বুশরাকেই একমাত্র আসামি করা হয়।

আরও পড়ুন:

Also Read: ফারদিনের মৃত্যু: অবশেষে বুশরার জামিন

Also Read: ফারদিনের মৃত্যু: ‍বুশরার জামিন শুনানি শেষে আদেশের অপেক্ষা

Also Read: ফারদিনের মৃত্যু: পুলিশ প্রতিবেদনে আটকে বুশরার মুক্তি

Also Read: ফারদিনের বন্ধু বুশরা ‘জড়িত নয়’ জানিয়ে প্রতিবেদন দেবে ডিবি