দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সহিংসতায় আহত ভোট কর্মকর্তা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর সদস্যদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে ৪৭ লাখ টাকার মঞ্জুরি চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 20 Jun 2014, 10:12 PM
৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই ভোট কর্মকর্তা নিহত এবং ১৩৩ জন আহত হন।
ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে যেকোনো দিন ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেয়ার ব্যাপারে বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররা সম্মতি দিয়েছেন।
নির্বাচনের প্রায় সাড়ে ৫ মাস পর ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি তাদের পরিজনকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার বিষয়টিও চূড়ান্ত করা হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে এ ধরনের উদ্যোগ এবারই প্রথম নেয়া হয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট ও সমমনাদের নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণার মধ্য দিয়ে ৫ জানুয়ারি ১৪৭ আসনে ভোট হয়। বাকি ১৫৩ আসনে একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চলে ভোটের আগে থেকে। নির্বাচনের দিনই সহিংসতায় মারা যান ২১ জন।
এসময় বিচ্ছিন্নভাবে দেশের বিভিন্নস্থানে নির্বাচন সামগ্রীতে অগ্নিসংযোগ, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের মারধর, পাঁচ শতাধিক কেন্দ্রভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
ভোটের পরই দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় সহিংসতায় আহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার লক্ষ্যে তালিকা করে ইসি।
এ ধারাবাহিকতায় কয়েকমাস ধরে তালিকা পর্যালোচনা করে বৃহস্পতিবার তা চূড়ান্ত করা হয়।
ইসি সচিবালয়ের বাজেট শাখার উপ সচিব সাজাহান খান বলেন, "আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যসহ ভোটগ্রহণে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী হতাহতদের প্রায় তিনশ’ জনের তালিকা পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে নিহত দু’জনের স্বজনদের সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা করে ১১ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, "সব পর্যালোচনা করে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আনসার-ভিডিপি’র হতাহতদের ক্ষতিপূরণের অর্থ বরাদ্দ অনুমোদন করেছে কমিশন।"
ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক তালিকায় পুলিশের ১০৮ জন, সশস্ত্রবাহিনীর ২২ জন ও বিজিবি’র ৫৫ সদস্য আহতের নামও প্রাথমিক তালিকায় ছিল।
তবে তাদের অর্থবরাদ্দ দেয় নি কমিশন। ভোটের সময় নিরাপত্তা ব্যয় বেশি হওয়ায় ছোটখাটো আহতের ঘটনা বিবেচনায় আনা হয় নি।
এছাড়া আলাদাভাবে আরো তিনজনকে মোট দেড় লাখ টাকা ও নিহত দুইজনের স্বজনদের ১১ লাখ টাকা ইতোমধ্যেই তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, “আহতের ধরন বিবেচনায় ১০ হাজার টাকা, ২০ হাজার টাকা ও গুরুতর আহতকে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও আনসার ভিডিপির মহাপরিচালক বরাবর এ অর্থ পাঠানো হয়েছে।”
রিটার্নিং কর্মকর্তা পরবর্তীতে তালিকাভুক্ত আহতদেরকে এই অর্থ পরিশোধ করবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, আহত-নিহতদের পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা কার্যক্রমে সহায়তা দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এবং স্বাস্থ্যসেবা দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেও আগামী সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট সচিবের কাছে অনুরোধ জানানো হবে।