দশম সংসদ নির্বাচনে সহিংসতায় হতাহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা সংগ্রহ করেছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 01 Feb 2014, 02:03 PM
ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি তাদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবারের সদস্যদের বিনামূল্যে শিক্ষা সুবিধা দেয়ার সুপারিশও করা হচ্ছে বলে ইসির উপসচিব মিহির সারওয়ার মোর্শেদ জানিয়েছেন।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বর্জনে সংঘাত-সহিংসতায় মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। তখন ভোটবিরোধীরা শতাধিক কেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়, হামলায় নিহত হন ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাও।
ভবিষ্যতে ভোটের দায়িত্ব পালনে যেন কেউ নিরুৎসাহিত না হয়, সেজন্যই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
মিহির সারওয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভোটের সময় ক্ষতিগ্রস্ত ২৭৩ জনের মতো কর্মকর্তার নাম সংগ্রহ করেছেন তারা।
ওই নির্বাচনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের যে প্রস্তাব ইসি চূড়ান্ত করেছে, তাতে নিহতের পরিবারকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা, গুরুতর আহত ব্যক্তিকে ১ থেকে ২ লাখ, ক্ষতিগ্রস্তের ধরন অনুযায়ী ৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব রয়েছে।
ইসির উপসচিব বলেন, “ইসি সাধ্যমতো ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছে। তবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করার বিষয়ে কমিশন সভায় শিগগির উপস্থাপন করা হবে।”
ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত হয়েছেন দিনাজপুরে একজন, ঠাকুরগাঁওয়ে একজন ও ঝিনাইদহে একজন।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সদস্য মিলে চট্টগ্রাম জেলায় ১৫ জন, দিনাজপুরে ৭৩ জন, যশোরে ৪৫ জন, বগুড়ায় ৩ জন, রংপুরে ১২ জন, লালমনিরহাটে ১০ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩৬ জন, গাইবান্ধায় ১৩ জন, ঝিনাইদহে ৭ জন, মৌলভীবাজারে ২ জন, কুমিল্লায় ৭ জন, জামালপুরে ১৯ জন, শেরপুরে ৯ জন, ময়মনসিংহে ১ জন, রাজশাহীতে ৩ জন, নীলফামারীতে ১৬ জন ও মাগুরায় ২ জন আহত হয়েছেন।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, আহত কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন তাদেরকে ৫ হাজার টাকা, আহত হয়ে যারা তিন দিন হাসপাতালে ছিলেন তাদের জন্য ১০ হাজার টাকা, সাত দিন হাসপাতালে ছিলেন তাদের জন্য ২৫ হাজার টাকা, এবং গুরুতর আহতদের জন্য ধরন অনুযায়ী ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেয়া হতে পারে।
নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইসির নীতিমালার আলোকে ইতোমধ্যে নিহত দুজন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে (প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা) সাড়ে ৫ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্তদেরও তা অব্যাহত রাখা হবে।”
ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ইসির কার্যপত্রে বলা হয়েছে, “জাতীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কোনোভাবেই পূরণ হওয়ার নয়। তবুও নিহত কর্মকর্তাদের পরিবার বা নির্ভরশীলরা যাতে সচ্ছলভাবে পরবর্তী জীবনযাপন করতে পারে, সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সুবিধা দিতে অনুরোধ জানানো যেতে পারে।”
সব ধরনের প্রস্তাব কমিশন সভায় আলোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম নেয়া হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার হাফিজ।