নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে আহত এবং নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে নীতিমালা অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
Published : 28 Aug 2013, 07:34 PM
এক্ষেত্রে আহতদের জন্য এক লাখ টাকা, গুরুতর আহতদের দুই লাখ টাকা ও নিহতের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এনামুল হক জানান, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় আহত-নিহতের পরিবারকে বরাবরই দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ দেয় কমিশন। কিন্তু কোনো নীতিমালা ছিল না।
ইসি ও বাইরে থেকে নিয়োজিতদের সমান অনুদানের সুযোগ রেখে নতুন নীতিমালার বিষয়ে তিনি বলেন, “ইসির বাজেট থেকে এবার অন্তত কোটি টাকার একটি বরাদ্দ আলাদাভাবে সংস্থান রাখার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এজন্যে ভোটে দায়িত্বরত কর্মকর্তা কর্মচারী ও আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং ইসির নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্থিক সহায়তার বিষয়টি প্রথমবারের মতো নীতিমালা আওতায় আনা হচ্ছে”।
জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করে। সাধারণ ও উপ নির্বাচনে এদের পরিমাণ নির্ধারণ হলেও জাতীয় নির্বাচনে নিয়োজিত থাকে বারো লাখের মতো লোক।
এ প্রস্তাব সম্প্রতি কমিশন সভায় অনুমোদন করা হয়েছে বলে জানান বুধবার সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ।
“ক্ষতিপূরণের বিষয়টি মানবিক হওয়ায় তহবিল গঠনের এ প্রস্তাব নিয়ে কোনো আপত্তি করিনি আমরা। নীতিমালাটি পাস করেছে কমিশন। এর ফলে সংশ্লিষ্টদের কাজের উৎসাহ আরো বেড়ে যাবে।”
কমিশন সভায় উপস্থাপিত কার্যপত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অনাকাঙ্খিত নানা ধরনের গোলযোগ ও সহিংসতায় দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য এবং ইসির জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী যাদের দুর্ঘটনায় অঙ্গহানী ঘটে; গুরুতর অসুস্থ কিংবা চাকরিরত অবস্থায় স্বাভাবিক মৃত্যু হলে তাদের সুচিকিৎসা ও নিহদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
সর্বশেষ ২০১১ সালে পৌরসভা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নরসিংদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হয়। তৎকালীন ইসি তাদের পরিবারকেও আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল।
দেশজুড়ে প্রতিটি নির্বাচনে কয়েক লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকে। ৮ কোটি ১০ লাখ ভোটারের নবম সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ছাড়া ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োজিত ছিল। ৩৫ হাজারেরও বেশি ভোটকেন্দ্র ও ভ্রাম্যমাণ মিলিয়ে ৭ লাখের মতো আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকে।
দশম সংসদ নির্বাচনে ৯ কোটি ২২ লাখ ভোটারের বিপরীতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে।