কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে হত্যাকাণ্ডে অভিযোগের মুখে থাকা র্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রমাণের অপেক্ষায় রয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
Published : 08 May 2014, 05:40 PM
তিনি বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসার জবাবে বলেছেন, “তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তাদের অপরাধ সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হলে তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হবে।”
র্যাব-১১ এ থাকা সামরিক বাহিনীর ওই তিন কর্মকর্তাকে এই অপহরণের পর নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে নিজ নিজ বাহিনীতে পাঠানো হয়। বুধবার তাদের অবসরেও পাঠানো হয়েছে।
এই তিন কর্মকর্তার একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা। অন্য দুজন হলেন সেনাবাহিনীর মেজর আরিফ হোসেন এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা নিয়ে র্যাব কর্মকর্তারা সাতজনকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম।
File Photo
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ পাওয়ায় তাদেরকে (র্যাব) প্রত্যাহার করা হয়। ইতোমধ্যে চাকরিও হারিয়েছেন তারা।
নারায়ণগঞ্জ র্যাবে থাকা তিন কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠানোর পর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিচার কোন প্রক্রিয়ায় হবে- জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, “যেহেতু তারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, তাই আপনারা (সাংবাদিক) এই বিষয়টি জানতে চাচ্ছেন, তা আমি বুঝেছি।
“তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই বলা যাবে তাদের বিচার কোন আইনে করা হবে, তদন্ত শেষ হোক... মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সব হচ্ছে।”
নূর হোসেনের অবস্থান নিশ্চিত নন প্রতিমন্ত্রী
নজরুল হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নূর হোসেন দেশে আছেন বলে কয়েকদিন আগে বললেও এখন তা থেকে সরে এসেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান।
“নূর হোসেন দেশে না বিদেশে, নিশ্চিত নই,” বৃহস্পতিবার বলেছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর হোসেন সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও। তিনি আন্তঃজেলা ট্রাক চালক ইউনিয়নের সিদ্ধিরগঞ্জ শাখার সভাপতিও।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকে নূর হোসেন পলাতক। বাড়িতে অভিযান চালিয়েও তাকে পায়নি পুলিশ।
এজাহারভুক্ত আসামি ছাড়াও সন্দেহভাজনদের বিদেশ যাওয়ায় নজরদারি রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
“খুব শিগগিরই বলতে পারব, কারা কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত,” বলেন আসাদুজ্জামান।
নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর সারাদেশে অপহরণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো দলের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করেন কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বিএনপি তো গুপ্ত হত্যার কথা বলেছেই। এটা বলার পরইতো অপহরণের ঘটনা বেড়ে গেছে।”
সাত খুন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চললেও দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের ‘চাপ’ অনুভব করছেন না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
“আমি চাপ অনুভব করি না। আমাদের দিক থেকে সব কিছু পরিষ্কার। ওই ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর সেই ধরনের নির্দেশনা রয়েছে।”