কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে ‘টাকার বিনিময়ে’ হত্যার ঘটনায় অভিযোগের মুখে থাকা নারায়ণগঞ্জে র্যাব-১১ এ থাকা তিন কর্মকর্তা চাকরি হারিয়েছেন।
Published : 07 May 2014, 12:18 PM
এদের মধ্যে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদও রয়েছেন।
তারেক সাঈদ র্যাব-১১ এর অধিনায়ক ছিলেন। সাতজনকে অপহরণের পর তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে এনে ওই দিনই সেনাবাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
চাকরিচ্যুত অন্য দুজন হলেন- সেনাবাহিনীর মেজর আরিফ হোসেন এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানা। এই দুজনও নারায়ণগঞ্জে র্যাব-১১ এ কর্মরত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডে র্যাবের কেউ জড়িত থাকলেও ছাড় না দেয়া হবে না বলে মন্ত্রীদের বক্তব্যের মধ্যে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বুধবার তিনজনকে অবসরে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক (সেনা) রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে তারেক এবং আরিফের অকালীন অবসরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।”
তবে দুপুর পর্যন্ত আইএসপিআর কোনো প্রজ্ঞাপন পায়নি বলে জানান তিনি।
এমএম রানাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়ার বিষয়টি নৌবাহিনী বাহিনী মৌখিকভাবে নিশ্চিত করলেও প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়নি বলে জানান আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক (নৌ) তাপসী রাবেয়া লোপা।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে র্যাব পরিচয়ে অপহরণ করা হয় বলে অপহৃতদের পরিবার অভিযোগ তোলে।
সেদিন র্যাব-১১ এর তৎকালীন অধিনায়ক তারেক সাঈদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তারা কাউকে আটক করেননি এবং এই ঘটনার সঙ্গে তার বাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্টতাও নেই।
অপহরণের চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার দুদিন পর নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার, দুটি থানার ওসির পাশাপাশি র্যাবের এই কর্মকর্তাদেরও প্রত্যাহার করা হয়।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান সেদিনই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন যে লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদকে সেনাবাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম এরপর অভিযোগ তোলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেন র্যাবকে ৬ কোটি টাকা দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
শহীদুল নাম উল্লেখ না করে চাঁদপুরের সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রিসভার এক সদস্যের স্বজন এক র্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ওই মন্ত্রীর এক ছেলে এই অর্থের লেনদেনে ছিল বলে তার অভিযোগ।
গুরুতর এই অভিযোগ ওঠার পর র্যাব নিজ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর তদন্ত করতে হাই কোর্টও সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, তদেন্ত যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাদের ছাড় দেয়া হবে না।
র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান মঙ্গলবার সংসদীয় কমিটিকে আশ্বস্ত করেছেন, দোষী সদস্যদের রক্ষার কোনো চেষ্টা র্যাব করবে না।