শুধু ‘চাকরিচ্যুত’ করলে হবে না: নজরুলের স্ত্রী

কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে ‘জড়িত’ র‌্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2014, 01:47 PM
Updated : 7 May 2014, 01:47 PM

নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় অভিযোগের মুখে থাকা র‌্যাবে কর্মরত সামরিক বাহিনীর তিন কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠানোর প্রতিক্রিয়ায় বুধবার তিনি এই দাবি জানান।

অবসরে পাঠানো সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদের দিকে সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন সেলিনা।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা তারেক সাঈদ র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক ছিলেন।

গত ২৭ এপ্রিল নজরুলসহ সাতজনকে অপহরণের দুদিন পর তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে এনে ওই দিনই সেনাবাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

সেলিনা সাংবাদিকদের বলেন, “প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া আমার স্বামীসহ জনকে হত্যা করা সম্ভব নয়। ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে র‌্যাবের সিও তারেক সাঈদসহ অন্যরা তাদেরকে হত্যা করেছে।

“তাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত র‌্যাব কর্মকর্তাদের শুধু চাকরিচ্যুত করলেই হবে না। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে।”

অবসরে পাঠানো অন্য দুজন হলেন- সেনাবাহিনীর মেজর আরিফ হোসেন এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানা। এই দুজনও নারায়ণগঞ্জে র‌্যাব-১১ এ কর্মরত ছিলেন।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ করা হয় বলে অপহৃতদের পরিবার অভিযোগ তোলে।

সেদিন র‌্যাব-১১ এর তৎকালীন অধিনায়ক তারেক সাঈদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তারা কাউকে আটক করেননি এবং এই ঘটনার সঙ্গে তার বাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্টতাও নেই।

অপহরণের চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার দুদিন পর নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার, দুটি থানার ওসির পাশাপাশি র‌্যাবের এই কর্মকর্তাদেরও প্রত্যাহার করা হয়।

গত ৩০ এপ্রিল লাশ উদ্ধারের পর সেলিনা ইসলামের কান্না

এর পরের দিনই শীতলক্ষ্যা নদীতে অপহৃতদের লাশ ভেসে ওঠে, যাদের অপহরণের পরপরই হত্যা করা হয়েছিল বলে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম এরপর অভিযোগ তোলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেন র‌্যাবকে ৬ কোটি টাকা দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

গুরুতর এই অভিযোগ ওঠার পর র‌্যাব নিজ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর তদন্ত করতে হাই কোর্টও সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, তদেন্ত যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাদের ছাড় দেয়া হবে না।

র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান মঙ্গলবার সংসদীয় কমিটিকে আশ্বস্ত করেছেন, দোষী সদস্যদের রক্ষার কোনো চেষ্টা র‌্যাব করবে না।