নারায়ণগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করে র্যাব বিলুপ্তির দাবি উঠলেও তা নাকচ করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
Published : 07 May 2014, 09:13 PM
“র্যাব বিলুপ্তির প্রশ্নেই উঠে না। যারা অপকর্ম করেছে, তাদের শাস্তি হয়েছে। অনেকে জেলও খেটেছেন,” বলেছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের সাত খুন পরবর্তী প্রশাসনিক বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী একথা বলার কিছু সময় আগেই এখন র্যাব রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় র্যাবের ‘সুনাম’ কিছুটা নষ্ট হয়েছে স্বীকার করে আসাদুজ্জামান বলেন, “তবে সরকারও তো ‘রিপেয়ার’ করছে।”
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার আমলে ২০০৪ সালে সন্ত্রাস দমনে র্যাব গঠনের পরপরই এই বিশেষ বাহিনীর ‘ক্রসফায়ারের’ নামে হত্যার প্রতিবাদে উচ্চকণ্ঠ মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
এর মধ্যেই নারায়ণগঞ্জে নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ৬ কোটি টাকা দিয়ে র্যাব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তার জামাতাকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, অপহরণের পর মামলায় র্যাব-১১ এর কর্মকর্তাদের আসামি করতে চাইলেও পুলিশ তা করতে দেয়নি।
এই বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অনেকের নামই আসতে পারে। তবে তদন্তে যাদের নাম আসবে, তাদের প্রচলিত আইনে সাজা দেয়া হবে।
গুরুতর এই অভিযোগ ওঠার পর র্যাবের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রশাসনিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্টও।
অভিযোগের মুখে থাকা র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদকে নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে সেনাবাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়।
নারায়ণগঞ্জে র্যাবের দায়িত্বে থাকা তারেকসহ সামরিক বাহিনীর তিন কর্মকর্তাকে অবসরেও পাঠানো হয়েছে।
অপহরণের পর নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করা হয়। পুলিশ সুপার নুরুল ইসলামকে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবিতে) আনা হয়েছে। যুগ্মসচিব হিসেবে নৌমন্ত্রণালয়ে আনা হয়েছে জেলা প্রশাসক মনোজ বড়ালকে।
এতে কার্যত তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে বলে কেউ কেউ দাবি করেছেন। এর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এখানে পুরস্কারও নয়, শাস্তিও নয়। তদন্ত হচ্ছে, যে দোষী হবে, তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।”
নারায়ণগঞ্জে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারো কর্তব্যে অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
হত্যাকাণ্ডের আসামিদের কেউ এখনো গ্রেপ্তার না হলেও তাদের পালানো ঠেকাতে সীমান্ত ও বিমানবন্দরগুলোতে নজরদারি রয়েছে বলে আসাদুজ্জামান জানান।