কাউকে ‘রক্ষার’ চেষ্টা করব না: প্রতিশ্রুতি র‌্যাবের

নারায়ণগঞ্জে কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাত খুনে বাহিনীর কোনো কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তাকে বাঁচানোর কোনো চেষ্টা করা হবে না বলে সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে র‌্যাব।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2014, 11:01 AM
Updated : 6 May 2014, 06:09 PM

মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে র‌্যাবের প্রধান এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে কমিটির সভাপতি টিপু মুনশী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে অপহরণের ঘটনা এবং সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি এবং এ ঘটনায় জনপ্রতিনিধিরা ‘বিব্রত’।

সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করা নারায়ণগঞ্জের সাত খুন নিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও বিস্তারিত আলোচনা হয়।

নারায়ণগঞ্জের হত্যাকাণ্ডে র‌্যাব-১১ এর কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম তোলার পর তার তদন্তে এই বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ওই কমিটি গঠনের একদিন বাদেই সংসদীয় কমিটি বৈঠকে বসে, যাতে র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকারও ছিলেন।

টিপু মুনশী বলেন, “আমরা সংশ্লিষ্টদের বলেছি, যে ঘটনা ঘটেছে তাতে কমিটি উদ্বিগ্ন। জনপ্রতিনিধিরা এ ঘটনায় বিব্রত হয়েছে, কারণ জনগণকে আমাদের জবাব দিতে হয়।”

আইজিপি এবং র‌্যাবের মহাপরিচালক সংসদীয় কমিটিকে বলেছেন, তারা ‘শিগগিরই’ এ বিষয়ে সবাইকে স্পষ্ট ধারণা দেবেন।

“র‌্যাব বলেছে, তারা কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করবে না। যেই জড়িত থাকুক না কেন, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে,” বলেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য টিপু মুনশী।

এই প্রসঙ্গে র‌্যাব মহাপরিচালক চট্টগ্রামে মাজারের অর্থ লুটের ঘটনায় বাহিনীর এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নজিরও তুলে ধরেন।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়।

ওই অপহরণের পর র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক তারেক সাঈদ মাহমুদকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে এনে সেনাবাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়। নজরুলের শ্বশুরের মূল অভিযোগ তার বিরুদ্ধেই।

তারেক সাঈদ একজন মন্ত্রীর জামাতা বলে প্রকাশ পাওয়ায় সে বিষয়ে জানতে চাইলে টিপু মুনশী বলেন, “আমরা বিষয়টি গণমাধ্যমের মাধ্যমে জেনেছি।

“আমরা সংশ্লিষ্টদের বলেছি, কোনো একজনের জন্য সরকার বা দল দায়ী থাকবে না। দায়ী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেন, এই ধরনের অপরাধ সাধারণ নাগরিক করলে যে শাস্তি হত, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তার শাস্তি এর চেয়েও বেশি হওয়া উচিত।

টিপু মুনশী জানান, অপহরণ ও খুনের ঘটনা তদন্তের অগ্রগতি জানতে সংসদীয় কমিটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আবার বৈঠকে বসবে।

বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন কমিটির সদস্য মো. মোজাম্মেল হোসেন, শামসুল হক টুকু, মো. ফরিদুল হক খান, আবুল কালাম আজাদ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এবং কামরুন নাহার চৌধুরী।