নারায়ণগঞ্জের হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে অর্ধ শতাধিক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানের মালিককে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Published : 10 Jul 2021, 12:09 PM
রূপগঞ্জ উপজেলায় ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের দুদিন পর শনিবার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার প্রস্তুতি চলছে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে মামলা হবে।”
“এরই মধ্যে কয়েকজনকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে,” বলেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার ওই কারখানায় আগুন লাগার পর এরই মধ্যে ৫২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আগুন পুরোপুরি নেভাবে শনিবার সকালেও ফায়ার সার্ভিস কাজ করছিল।
নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) আবির হোসেন শনিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফায়ার সার্ভিস এখনও ওই ভবনে কাজ করছে। আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে কারখানাটি তাদের বুঝিয়ে দেবে।
“ভবনটি বুঝে পাওয়ার পর মামলা করার আগেহ তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিদর্শন করবেন,” বলেন তিনি।
হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পর সেখানে ত্রুটিপূর্ণ অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, জরুরি নির্গমন পথে তালা লাগানোর বিষয়টি জানা গেছে। কারখানাটিতে শিশু শ্রমিক ব্যবহারের বিষয়টিও হয়েছে প্রকাশ্য।
কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারী কারা কোন দায়িত্বে ছিলেন, তাদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এরই মধ্যে মালিকসহ একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়েছে। তার ভিত্তিতে তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।”
তিনি বলেন, মামলায় দণ্ডবিধির ৩০৪, ৩০৪ (ক), ৩০৭, ধারাগুলো আসতে পারে। এসব ধারায় অবহেলাজনিত হত্যার বিষয়গুলো রয়েছে।
ওই কারখানার মালিক সজীব গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম অবশ্য অভিযোগ স্বীকার করতে চান না। অর্ধশত মৃত্যুর দায়ও তিনি নিতে রাজি নন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “এই কারখানা কম্পাউন্ডে আমরা ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। দুই হাজারের বেশি শ্রমিকের সেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে। নিয়মকানুন মেনেই আমরা ব্যবসা করছি। কিন্তু শেষ জীবনে এসে বড় পরীক্ষার মুখে ফেলে দিল এই অগ্নিকাণ্ড।”
ডিআইজি হাবিবুর বলেন, “কোনো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি চাইলে মামলা করতে পারেন, না হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।”
এই ঘটনা পর পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে জানিয়ে অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই নজদারিতে থাকা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
আরও খবর