ছাদের সিঁড়ি বন্ধ না থাকলে হাসেম ফুডসে অনেক প্রাণ বাঁচত: ফায়ার সার্ভিস

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আগুনে পোড়া হাসেম ফুডস কারখানার একটি সিঁড়ি বন্ধ না থাকলে অনেক প্রাণ বাঁচানো যেত বলে মনে করছেন ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক দেবাশিষ বর্ধন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2021, 09:10 AM
Updated : 9 July 2021, 03:53 PM

শুক্রবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ওই ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৪৯ জনের পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আগের রাতে মারা যাওয়া তিনজনসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ জন হয়েছে।

দেবাশিষ বর্ধন ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা গাড়ির মই সেট করে ছাদ থেকে ২৫ জনকে উদ্ধার করেছি। বাকিরা যদি ছাদে উঠতে পারত, আমরা কিন্তু বাঁচাতে পারতাম।”

নরায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আগুনে পোড়া হাসেম ফুডস কারখানায় ফায়ার সার্ভিসের দুই কর্মী। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

সজীব গ্রুপর এই কারখানায় জুস, বেভারেজসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরি হত। ছয় তলা ভবনের ছাদে ওঠার জন্য দুটি সিঁড়ি রয়েছে, যার একটির ছাদের দরজা বন্ধ ছিল বলে জানান দেবাশিষ বর্ধন।

তিনি বলেন, চতুর্থ তলায় যারা ছিলেন, সেখান থেকে ছাদে যাওয়ার সিঁড়ি তালাবন্ধ ছিল। আর নিচের দিকে সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়ে ছিল ভয়াবহ আগুন। উনারা নিচের দিকেও আসতে পারেন নাই, তালাবন্ধ থাকায় উনারা ছাদেও যেতে পারেন নাই।”

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আগুনে পোড়া হাসেম ফুডস কারখানা থেকে হতভাগ্য শ্রমিকদের লাশ বের করে আনছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

কারখানায় অগ্নি নির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল কি না জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, “সেটা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। আমাদের তদন্ত কমিটি বের করবে কী কারণে আগুন লাগল, কত টাকার ক্ষতি হল,অগ্নি নির্বাপত্তার ব্যবস্থা ছিল কি না।”

রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার এ কারখানায় বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন লাগার পর রাতে তিনজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন।

অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর ১৮টি ইউনিট শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস কারখানায় জ্বলছে আগুন, ১৬ ঘণ্টা পরও অনেক শ্রমিকের খোঁজ না মেলায় বাইরে উদ্বিগ্ন স্বজনদের অপেক্ষা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক সিদ্দিক মোহাম্মদ জুলফিকার রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একেকটি ফ্লোর ৩৫ হাজার স্কয়ার ফিটের। সিঁড়ি মাত্র দুটি। সিঁড়িতেও আগুন ছিল, ফলে অনেকে বের হতে পারেনি।

“আমরা পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় যাওয়ার চেষ্টা করছি। অনেক বড় ফ্লোর এবং ভেতরে খোপ খোপ কক্ষ থাকায় আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে। এখনও ধোঁয়া ফলে, ছাদে উঠতেও ঝামেলা হচ্ছে।”