শুক্রবার বিকালে আগুনে পোড়া হাসেম ফুডস কারখানা থেকে উদ্ধার হওয়া ৪৮টি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর পর মায়ের খোঁজে সেখানে এসেছিলেন এই তরুণ।
তিনি জানালেন, তাদের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদরে। তাদের পুরো পরিবার রূপগঞ্জের নতুন বাজার এলাকায় থাকত। তার মা অমৃতা বেগম (৩৮) মাসখানেক ধরে কারখানায় কাজ করতেন।
শামীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে আগুন লাগার পর ওই কারখানার সামনে গিয়ে চিৎকার করে তার মাকে ডেকেছিলেন।
“কারখানার দারোয়ান আমাকে উপরে উঠতে দিচ্ছিল না। ঝগড়া করে ঢুকেছিলাম এবং চারতলায় উঠেছিলাম। কিন্তু আগুন বেড়ে যাওয়ায় আবার নিচে নেমে আসি।”
তিনি বলেন, প্রথমে নিচতলায় আগুন লাগলেও তা নিভে যায়। পরে চারতলায় আগুন দেখা যায়।
“চারতলার দারোয়ান কাউকে নামতে দেয়নি। দারোয়ান আসতে দিলে আমার মা বের হয়ে আসতে পারতো।”
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শামীম বলেন, “আমার মা এখন কোথায় জানি না। বেঁচে আছেন না....!”
মায়ের খোঁজে কিশোরগঞ্জ সদর থেকে মর্গে এসেছেন দেলোয়ার হোসেন।
শান্তা মনি আক্তার (১৪) নামে আরও একজনের খোঁজে মর্গে এসেছেন তার স্বজনরা।
শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে লাশবাহী পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পৌঁছে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সে ৪৮টি মৃতদেহ আনা হয়েছে।
শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, এই মৃতদেহগুলোর সুরতহাল করবে জেলা পুলিশ এবং তার পর ময়নাতদন্ত হবে।
সার্বিক পর্যবেক্ষণ করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ মর্গে রয়েছে।
উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় সেজান জুস, কোমল পানীয় ও বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী তৈরির ওই কারখানায় বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন লাগার পর রাতে তিনজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন।
দুপুরে লাশ উদ্ধারের আগে স্বজনদের বক্তব্যের ভিত্তিতে ৪৭ জন নিখোঁজ শ্রমিকের তালিকা করেছিল রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত বলেন, “অনেক লাশ শনাক্ত করার মত অবস্থায় নেই। সেগুলো ঢাকা মেডিকেলের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য বলা হবে।”