মগবাজারে বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ‘গ্যাস’ থেকেই ভয়াল এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
Published : 29 Jun 2021, 03:56 PM
এখন এই গ্যাসের উৎস খুঁজে বের করতে কাজ চলছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির সভাপতি সিটিটিসি এর প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান।
এর আগে সোমবার ধ্বংসস্তূপের বাতাস পরীক্ষা করে হাইড্রোকার্বন গ্যাসের উপস্থিতি পেয়েছেন বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তবে কেন, কীভাবে ওই বিস্ফোরণ ঘটল, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু কেউ বলেননি।
রোববার সন্ধ্যায় মগবাজারের ওয়্যারলেস গেটে ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে ভবন ধসে হতাহতের ঘটনার কারণ খুঁজতে সোমবার রাতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে পুলিশ।
মঙ্গলবার কাজ শুরু করে এই কমিটি। সকালে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "পরীক্ষা করে ১২ শতাংশ মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
“তবে এই গ্যাসের উৎস কী, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শুধু এটুকুই বলা যাচ্ছে, মিথেন গ্যাস থেকেই এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান করছি।"
এর আগে ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলেছেন, তিনতলা ওই ভবনে গ্যাস জমে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছেন।
বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিস ও বিস্ফোরক অধিদপ্তরও তদন্ত কমিটি গঠন করছে।
এদিকে মঙ্গলবার বিস্ফোরণস্থলের পাশের আরেকটি দোতলা ভবন হেলে পড়েছে বলে চিহ্নিত করেছে কারিগরি কমিটি।
এই ভবনকে বিপদজনক ঘোষণা করে ভেতর থেকে লোকজনকে সরে যেতে বলা হয়েছে।
বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ-আইইডির বিস্ফোরণ এরকম হয় কিনা, দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “এতবড় পরিসরের বিস্ফোরণের কারণ তদন্ত করা হচ্ছে। আলামত সংগ্রহ করছি।
“তবে এখানে কোনো আইইডি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি।“
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ওয়্যারলেস গেইট এলাকা কেঁপে ওঠে। এতে আউটার সার্কুলার রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের তিনতলা একটি ভবন প্রায় ধসে পড়ে।
বিস্ফোরণের ধাক্কায় রাস্তার উল্টো দিকে আড়ং, বিশাল সেন্টার, নজরুল শিক্ষালয়, রাশমনো হাসনপাতালসহ আশপাশের ডজনখানেক ভবনের কাচ ভেঙে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তায় থাকা তিনটি বাস ও যাত্রীরা।
ওই ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন চার শতাধিক। এখনও হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন কয়েকজন।
বাবার খোঁজে মেয়ে
এদিকে ওই ভবনের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ হাওলাদারকে (৬৫) এখনও খুঁজছে তার মেয়ে হেনা বেগম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সব হাসপাতালে গিয়েছি কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না বাবাকে।“
রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই পর্যন্ত একজনই নিখোঁজের সংবাদ পেয়েছি।
ফায়ার সার্ভিস এখনও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। ভবনের নিচতলা ও আশপাশে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে।
আরও পড়ুন