স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালটিতে চালানো র্যাবের অভিযান ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পর ‘দেশ ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে’।
এ অবস্থায় রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমঝোতা চুক্তি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
এছাড়া সমঝোতা চুক্তির শর্ত ভেঙে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুত মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে।
গত ২১ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে রিজেন্ট হাসপাতালের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তৎকালীন সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কীভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চুক্তি করল- এ প্রশ্নে অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. আমিনুল হাসান বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন ‘বাধ্য হয়ে’ তা করেছিলেন তারা।
“তারা (রিজেন্ট) সার্ভিসটা দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছিল। তখন আমরা এই ধরনের হাসপাতাল খুঁজছিলাম। সে কারণে বিশেষ বিবেচনায় তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।”
তখন লাইসেন্স নবায়নের শর্ত দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “শর্ত ছিল, তারা অবিলম্বে লাইসেন্স নবায়ন করে নেবে। আমরা তাদের দুবার রিমাইন্ডার দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা নবায়ন করেনি।”
এরপরও রিজেন্টের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপে যায়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কোভিড-১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট জালিয়াতি, রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি র্যাবের অভিযানে প্রকাশ্য হওয়ার পর গত মঙ্গলবার হাসপাতালটি বন্ধ করার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
নানা অভিযোগে সোম ও মঙ্গলবার রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। বুধবার চালানো হয় মিরপুর শাখায়। দুই জায়গাতেই বেশ কিছু অনুমোদনহীন টেস্ট কিট এবং করোনাভাইরাসের ভুয়া রিপোর্ট পাওয়ার কথা জানানো হয় র্যাবের পক্ষ থেকে।
এ পর্যন্ত মোট আটজনকে আটক করা হলেও অভিযানের পর থেকে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ পলাতক।