পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে উঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তার স্পষ্ট জবাব মেলেনি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের কাছ থেকে।
Published : 19 Nov 2017, 05:20 PM
বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে ১১ অভিযোগ: সুপ্রিম কোর্ট
প্রধান বিচারপতির দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান হবে: আইনমন্ত্রী
আলোচিত এই বিষয়টি নিয়ে রোববার নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইকবাল মাহমুদ বলেন, “আপনি স্পেসিফিক যদি কারও ব্যাপারে বলেন, এর উত্তর দেব না। আমার কথা হচ্ছে, স্পেসিফিক কারও ব্যাপারে জিজ্ঞাসা না করাটাই বেটার (ভালো)।”
সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহার নাম ধরে কিছু বলতে না চাইলেও ইকবাল মাহমুদ বলেন, “যদি পাই, যারই হোক না কেন, আমরা দুর্নীতির অনুসন্ধান করব। এটা আমাদের বড় দাগের উত্তর।”
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে দীর্ঘ ছুটি নিয়ে বিদেশে যাওয়ার পর সেখান থেকে সম্প্রতি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন বিচারপতি সিনহা।
বিদেশ যাওয়ার আগে বিচারপতি সিনহার দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাঠানো বিরল এক বিবৃতিতে তার বিরুদ্ধে ১১টি ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের’ কথা বলা হয়।
এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগ, যা রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে পেয়েছেন বলে সর্বোচ্চ আদালতে তার অন্য সহকর্মীদের উদ্ধৃত করে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়।
রাষ্ট্রের তিন অঙ্গের একটি বিচার বিভাগের সাবেক প্রধান এস কে সিনহার বিরুদ্ধে যে ১১টি অভিযোগ উঠেছে, তা ফৌজদারি। এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব দুদকের বলে মন্তব্য আসে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছ থেকে।
আইনমন্ত্রীর মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সাবেক সচিব ইকবাল মাহমুদ বলেন, “এটার উত্তর আমি দিতে চাই। দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো দুর্নীতির বিষয় দেখবে কি দেখবে না, সেই সিদ্ধান্ত অন্য কেউ দেবে না। এটা কমিশনের সিদ্ধান্ত।”
রাষ্ট্রের আরেকটি অঙ্গের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেও একই ধরনের মন্তব্য আসছে বলে জানানো হলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “এটা আমি শুনিনি।
“আমার উত্তরটা হচ্ছে, দুদক তার নিজস্ব গতিতে চলবে, দুদক আইন অনুযায়ী চলবে। দুদকের আইনে বলা আছে, দুদক সিদ্ধান্ত নেবে, বাইরের কেউ সিদ্ধান্ত দেবে না।”
এই বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে যে ১১টি অভিযোগ উত্থাপন করে সুপ্রিম কোর্ট বিবৃতি দিয়েছিল, তার ভিত্তিতেই দুর্নীতি দমন কমিশনের ‘তদন্ত করা উচিৎ’।
দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বিচারপতি সিনহার বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি অস্ট্রেলিয়া হয়ে এখন কানাডায় রয়েছেন। কানাডায় যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুর থেকে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।
গত ১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়া রওনা হওয়ার আগে বিচারপতি সিনহা বলে গিয়েছিলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের আচরণে তিনি বিব্রত ও শঙ্কিত।
বিএনপি দাবি করছে, বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করতে ক্ষমতাসীনরা প্রধান বিচারপতি সিনহাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।
দুদক চেয়ারম্যানের আরও খবর