সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে শ্রম আদালতে মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার কর্মকর্তার বিচার চলতে বাধা রইল না।
Published : 20 Aug 2023, 11:55 AM
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার বিচার আটকাতে হাই কোর্টের পর আপিল বিভাগে গিয়েছিলেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস, কিন্তু সেখানেও তার আবেদন ধোপে টেকেনি।
সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে শ্রম আদালতে মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার কর্মকর্তার বিচার চলতে বাধা রইল না।
এ মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেছিলেন ইউনূস। হাই কোর্ট তা খারিজ করে দিলে এর বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে সাত বিচারকের আপিল বিভাগ রোববার সেই আপিল আবেদনও খারিজ করে দেয়।
ইউনূসের পক্ষে এদিন শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ।
আদেশের পর ইউনূসের আইনজীবী মামুন সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনা করে তারা পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে শ্রম আদালতে মামলা চলতে বাধা থাকল না। শ্রম আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে।”
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
ইউনূস ছাড়া মামলার অপর তিন বিবাদী হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
চলতি বছরের ৬ জুন মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা।
২১ জুন অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আবেদন করেন মুহাম্মদ ইউনূস। আবেদনে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চাওয়া হয়।
এরপর ২৩ জুলাই মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট।
বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাশের বেঞ্চ এ রুল জারি করে। পরে এই রুল বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষের এই আবেদন নিষ্পত্তি করে গত ৩ অগাস্ট আপিল বিভাগ এই রুল শুনানির জন্য বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের হাই কোর্ট বেঞ্চে পাঠায়। শুনানি শেষে ওই হাই কোর্ট বেঞ্চ রুল খারিজ করে রায় দেয়।
এর আগে এই মামলা বাতিলের জন্যও হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন ইউনূস। সেখানে নিজের পক্ষে রায় না পেয়ে আপিল বিভাগে গিয়েছিলেন। সেখানেও তাকে বিফল হতে হয়।
আরও পড়ুন
রুল খারিজ, শ্রম আদালতে ইউনূসের বিচার চলবে
জাতিসংঘ নজর রেখেছে, আদালতকে বললেন ইউনূসের আইনজীবী
ইউনূসের মামলা বাতিলের রুল শুনানি হবে হাই কোর্টের অন্য বেঞ্চে
ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় স্থিতাবস্থা