ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হাজিরা দিলেন প্রথম আলো সম্পাদক

স্বাধীনতা দিবসে এক সংবাদ প্রতিবেদনে ‘মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, জাতির জন্য মানহানিকর’ তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ ও প্রচারের অভিযোগে এ মামলা করা হয়েছিল।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2024, 01:19 PM
Updated : 20 March 2024, 01:19 PM

ঢাকার রমনা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আদালতে হাজিরা দিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস।

বুধবার তারা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে উপস্থিত হন। পরে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. সুলতান সোহাগ উদ্দিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আগামী ১২ মে দিন ধার্য করে দেন।

গত বছরের ২ এপ্রিল এ মামলায় প্রথম আলো সম্পাদককে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেয় হাই কোর্ট। পরে জজ আদালতও তাকে জামিন দেয়।

একই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক দিন কারাগারে থাকার পর জামিন পান সাভারে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান।

স্বাধীনতা দিবসে এক সংবাদ প্রতিবেদনে ‘মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, জাতির জন্য মানহানিকর’ তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ ও প্রচারের অভিযোগে ২৯ মার্চ মধ্যরাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন আইনজীবী মশিউর মালেক।

ওই মামলায় পত্রিকাটির নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া নাম উল্লেখ না করে একজন ‘সহযোগী ক্যামেরাম্যানকে’ আসামি করা হয় মামলার এজাহারে।

একজন শ্রমজীবী মানুষকে উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।”

ওই মন্তব্য ধরে শিরোনাম করা হলেও ছবি দেওয়া হয় আরেক শিশুর, যার কথা প্রতিবেদনের ভেতরে ছিল। ওই ছবি ও শিরোনাম দিয়ে সোশাল মিডিয়ায় একটি কার্ড পোস্ট করা হয়, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাত্তর টেলিভিশনে একটি প্রতিবেদনও প্রচার করা হয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা ওই প্রতিবেদনে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ উপাদান থাকার কথা বলন।

পরে প্রথম আলো প্রতিবেদনটি থেকে ছবি সরিয়ে শিরোনাম বদলে দেয়। পাশাপাশি তাদের সোশাল মিডিয়ায় দেওয়া পোস্টও প্রত্যাহার করা হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশের তিন দিন পর খবর আসে, শামসকে তার সাভারের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ‘সিআইডি’ পরিচয় দিয়ে। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের নেতা মো. গোলাম কিবরিয়া তেজগাঁও থানায় শামসকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। পরের রাতে রমনা থানায় মামলা করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি মশিউর মালেক।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ৩১ ও ৩৫ ধারায় দায়ের করা এ মামলায় ‘প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করার’ অভিযোগ আনা হয়।

মামলার এজাহারে বাদী মশিউর মালেক অভিযোগ করেন, স্বাধীনতা দিবসের দিনে প্রথম আলো ‘অসৎ উদশ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে জনমনে ‘অসন্তোষ’ সৃষ্টি হয়েছে এবং দেশে ‘অস্থিতিশীল পরিবেশ’ সৃষ্টি হয়ে ‘আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটার উপক্রম’ হয়েছে।

পুরনো খবর

Also Read: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: প্রথম আলো সম্পাদকের ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন

Also Read: জামিন নাকচ, সাংবাদিক শামস কারাগারে

Also Read: প্রথম আলো সম্পাদককে ‘হুকুমের আসামি’ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

Also Read: বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আবার বিতর্কে

Also Read: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে স্থগিত করুন: জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান