ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালত তুরিন আফরোজের জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
Published : 12 Apr 2025, 05:05 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এক শিক্ষার্থীকে ‘হত্যাচেষ্টার’ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালত তুরিন আফরোজের জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
চার দিনের রিমান্ড শেষে তুরিন আফরোজকে আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুমন মিয়া। আসামি পক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন। বিচারক শুনানি শেষে সাবেক প্রসিকিউটরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
উত্তরা পশ্চিম থানার আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের সাব-ইন্সপেক্টর আতিকুর রহমান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আব্দুল জব্বার নামের এক শিক্ষার্থীকে ‘হত্যাচেষ্টার’ মামলায় ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরার বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই সুমন মিয়া।
গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তুরনিকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ মামলার বিবরণে বলা হয়, আন্দোলনে সরকার পতনের দিন ৫ অগাস্ট দুপুর ১২টার দিকে আব্দুল জব্বার উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর বিএনএস সেন্টারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি।
গত ২৭ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার আসামির তালিকায় ৩০ নম্বরে রয়েছে তুরিন আফরোজের নাম।
যুদ্ধাপরাধের বিচারে ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেয় প্রসিকিউটর ছিলেন আইনজীবী তুহিন আফরোজ। জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলা পরিচালনায় তিনি ভূমিকা রাখেন।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলা চলার মধ্যে তার সঙ্গে গোপন বৈঠকের ঘটনায় ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে তুরিনকে অপসারণ করে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার।
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তুরিন। গতবছর অগাস্টে অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ অনেকের মত তার বিরুদ্ধেও কয়েকটি মামলা হয়।