বছর খানেক আগে দুদক এ মামলা করে।
Published : 29 Aug 2024, 12:14 PM
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানি হবে আগামী সোমবার।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেয়।
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস এই লিভ টু আপিলের আবেদনকারী।
ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক।
দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান ২০২৩ সালের ৩০ মে এ মামলা দায়ের করেন। তার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা ‘আত্মসাৎ’ করেছেন। সেই অর্থ ‘অবৈধভাবে স্থানান্তর’ করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।
এই মামলায় গত ১২ জুন মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ সৈয়দ আরাফাত হোসেন। মুহাম্মদ ইউনূস এই অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে (কোয়াশমেন্ট) হাই কোর্টে আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়। ওই খারিজের বিরুদ্ধে তিনি আপিল বিভাগে আসেন।
আরওপড়ুন:
গ্রামীণটেলিকম দুর্নীতি মামলা: অভিযোগগঠনেরবৈধতাচ্যালেঞ্জ
অর্থআত্মসাৎমামলায়অভিযোগগঠন: হাইকোর্টেযাবেনইউনূস
মামলার এজাহারে বলা হয়, ড. ইউনূস ও নাজমুল ইসলামসহ গ্রামীণ টেলিকম বোর্ড সদস্যদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় হিসাব খোলা হয়। তবে ব্যাংকে হিসাব খোলা হয় একদিন আগেই।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিককর্মচারী ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট চুক্তি হয় ওই বছরের ২৭ এপ্রিল।
সেটেলমেন্ট চুক্তিতেও ৮ মে ব্যাংক হিসাব দেখানো আছে, যা বাস্তবে অসম্ভব। ‘ভুয়া’ সেটেলমেন্ট চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ও ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গ্রামীণ টেলিকমের ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় স্থানান্তর করা হয় ২০২২ সালের ১০ মে।
পরে ২২ জুন অনুষ্ঠিত ১০৯তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অ্যাডভোকেট ফি হিসাবে অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা প্রদানের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়।
আরওপড়ুন:
নোবেলজয়ীইউনূসএবারআত্মসাতেঅভিযুক্ত
কীসেরবিচারহবে, 'বুঝতেপারছেননা' ইউনূস
অন্যদিকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাব থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারীই উনিয়ন নামীয় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের লোকাল অফিসের হিসাব থেকে তিন দফায় মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের পূর্বেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়েই ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ ২০২২ সালের মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে সিবিএ নেতা মো. কামরুজ্জামান, মাইনুল ইসলাম ও ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার হিসাবে ৩ কোটি টাকা করে স্থানান্তর করা হয়।
একইভাবে আইনজীবী মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অফ সিলনের ধানমন্ডি শাখার হিসাবে ৪ কোটি টাকা ও দি সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাবে ৫ কোটি টাকা এবং আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফ ও আইনজীবী মো. ইউসুফ আলীর স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গুলশান নর্থ শাখায় যৌথ হিসাবে ৬ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়, যা তাদের প্রাপ্য ছিল না।
দুদকের রেকর্ডপত্র অনুযায়ী, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সেটেলমেন্ট চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ‘অসৎ উদ্দেশ্যে জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে আত্মসাৎ করেছেন।’
আরওপড়ুন:
অর্থআত্মসাৎ: ইউনূসেরবিরুদ্ধেঅভিযোগপত্রআমলেনিয়েছেআদালত