রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা পেয়ে আগামী সপ্তাহে তদন্তে নামবে কমিশন।
Published : 06 Jan 2025, 09:59 PM
সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের তদন্ত শুরু করবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশনা পাওয়ায় কাউন্সিল আগামী সপ্তাহে তা তদন্তে নামবে বলে সুপ্রিম কোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
দেশের বিচারালয়ের সর্বোচ্চ এ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে সোমবার এ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়।
তবে কয়জন বিচারপতির বিষয়ে তদন্ত হবে সে বিষয়ে কিছু বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়নি। অভিযোগের বিষয়েও কিছু বলা হয়নি।
সুপ্রিম জিুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা পাঠানোর কথা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ”সে অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল আগামী সপ্তাহে তদন্ত শুরু করবে।”
এর আগে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হাই কোর্টের ‘কয়েকজন’ বিচারপতির বিষয়ে তদন্ত শেষে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল।
গত ১৫ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। সেদিনও বিচারকদের সংখ্যা বলা হয়নি।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বিচারপতির বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল সুপারিশ পাঠানোর পর রাষ্ট্রপতি তা বাস্তবায়ন করেন। তবে কতজনের তথ্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে, তা স্পষ্ট করা হয়নি সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তিতে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর গত অগাস্টে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ছাত্রদের বিক্ষোভের মধ্যে প্রধান বিাচারপতিসহ আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতি পদত্যাগ করেন।
পরে ফের বিক্ষোভের মধ্যে হাই কোর্টে বিভাগের ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। পরে তাদের হাই কোর্টে বিচারকাজ পরিচালনা থেকে বিরত রাখা হয়। এরপর হাই কোর্টের তিন বিচারপতি পদত্যাগ করেন।
বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত করে গত ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগ রায় দেয়।
এতে বিচারপতিদের বিষয়ে তদন্ত করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ব্যবস্থা নেওয়ার পথ উন্মুক্ত হয়।
একই সঙ্গে বিচারপতি অপসারণ প্রক্রিয়া নিয়ে গত সরকারের সময় যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, সেটিরও অবসান ঘটে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতি অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হলে সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে টানাপড়েন তৈরি হয়।
এরপর এক রিট মামলার রায়ে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে আপিল বিভাগ।
২০১৭ সালের ওই রায়েই বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত করার কথা বলা হয়। তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চের ওই রায় সরকারের সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের টানাপড়েনে নতুন মাত্রা দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও পরে আর শুনানির উদ্যোগ নেয়নি।
গত অগাস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে রিভিউ আবেদনটির শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করে।
এর আগে আওয়াম লীগ সরকারের সময় বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হককে ২০১৯ সালের অগাস্টে বিচারকাজ থেকে বিরত থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
এর পর থেকে তারা বিচারিক দায়িত্বের বাইরেই ছিলেন। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর এ বছর ১৯ নভেম্বর তাদের পদত্যাগের খবর জানানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে।
'কয়েকজন' বিচারপতির বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে জুডিশিয়াল কাউন্সিলের
বিচারপতি অপসারণ হবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে: রিভিউ
তিন বিচারপতির 'দুর্নীতির' অভিযোগ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর খবর
আপাতত বিচারিক দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না ১২ বিচারপতি