তিন চাকার এ বাহন বন্ধে হাই কোর্টের আদেশের পরদিন থেকে রাজধানীজুড়ে টানা বিক্ষোভ-অবরোধ করছেন চালকরা; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
Published : 24 Nov 2024, 09:57 PM
রাজধানীজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকদের বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের মধ্যে এ বাহন বন্ধে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রোববার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি বলেন, “ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করতে মহামান্য হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছে তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পাব বলে আমরা আশা করি।”
তবে কবে আপিল করা হবে সেই কথা বলেননি তিনি।
ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাই কোর্টের নির্দেশের পর রাজধানীজুড়ে বিক্ষোভ-অবরোধে নেমেছেন রিকশাচালকরা। মঙ্গলবারের এ আদেশের পরদিন থেকে তাদের টানা কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
পাঁচ দিন ধরে বিক্ষোভ চলার মধ্যে সরকারের আপিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানালেন উপ প্রেস সচিব।
আইনি বৈধতা না থাকলেও রাজধানীর অলিগলিতে দীর্ঘদিন থেকে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। তবে সরকার পতনের আন্দোলনের পর থেকে নগরীর প্রধান সড়কেও চলতে শুরু করে এসব বাহন।
এর মধ্যে গত মঙ্গলবার উচ্চ আদালত থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ আসে।
প্যাডেল চালিত রিকশা সমিতি করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
এর পরদিনই ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল অব্যাহত রাখার দাবিতে দয়াগঞ্জ মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রিকশাচালকরা।
কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে বৈধতা না থাকলেও ব্যাটারিচালিত রিকশা বিগত দশকজুড়ে গ্রাম ও শহরে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে শহরের সড়কগুলোতে এসব বাহনের সংখ্যাধিক্য ঘটায় তা জীবনযাত্রায় নতুন দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে।
এর আগে ২০২২ সালের এপ্রিল ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যানবাহন মহাসড়কে উঠতে পারবে না বলে আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। এর ফলে মহাসড়ক ছাড়া অন্য সব সড়কে এই যানগুলো চলার বৈধতা পায়।
চলতি বছরের শুরুতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ও ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চালকদের আন্দোলন প্রতিরোধের মুখে সরকার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ সময়ে আবারও এমন উদ্যোগ নেওয়ার পর গত পাঁচ দিন ধরে রাজধানীজুড়ে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ চলছে।
একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা বলেন, “আদালতের এই আদেশের বিপক্ষে স্থগিতাদেশ এনে আমরা বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করব। তা না হলে আদালতের আদেশ মান্য করতে হবে। তবে এটা ঠিক যে, রাজধানীতে রিকশা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।”
আরও খবর-
সাত দিনের মধ্যে সুরাহা চান ব্যাটারি রিকশার চালক-মালিকরা
ব্যাটারিচালিত রিকশা: বিক্ষোভ পঞ্চম দিনে
রিকশা চালকদের অবরোধ: ৫ ঘণ্টা পর দক্ষিণের পথে রেল চলাচল স্বাভাবিক
জুরাইনে রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের আদেশ: ভুগেছে যাত্রীরা, কেউ কেউ খুশি
ছয় ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল শুরু
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাংচুর, ৫ ঘণ্টা পর ‘স্বাভাবিক’ মহাখালী