বিক্ষোভকারীরা সরে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকা থেকে ওই লাইনের ট্রেন ছেড়ে যায়।
Published : 22 Nov 2024, 06:25 PM
ঢাকার জুরাইনে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের বিক্ষোভের জেরে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
রিকশাচালকরা বেলা ১১টার দিকে জুরাইন এলাকার সড়ক ও রেললাইন অবরোধ করলে ওই লাইনে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা সরে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকা থেকে ওই লাইনের ট্রেন ছেড়ে যায় বলে কমলাপুর স্টেশনের মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান।
তিনি বলেন, “রিকশা চালকরা রেললাইনে অবস্থান নিলে আমাদের পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চল ও নারায়ণগঞ্জমুখী সকল ট্রেন বন্ধ রাখতে হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশ্বাস পেলে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে কমলাপুর থেকে প্রথম ট্রেন ছেড়ে গেছে।”
ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশের প্রতিবাদে শুক্রবার তৃতীয় দিনের মত চালকরা রাস্তায় নামেন।
শ্যামপুর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রিকশাচালকদের অবরোধ চলাকালে দুপুর ১টার দিকে পুলিশ তাদের সড়ক ছেড়ে দিতে বললে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”
এরপর রিকশাচালকরা বিক্ষিপ্তভাবে ওই এলাকায় অবস্থান করলেও একপর্যায়ে সরে যায়। এরপর সড়কে যান চলাচল ও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানান ওসি।
প্যাডেল চালিত রিকশা সমিতি করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর হাই কোর্ট মঙ্গলবার ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের ওই আদেশ দেয়।
স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে হাই কোর্ট।
আদালত বলে, "ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই এটা পুরোপুরি অবৈধ।"
রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বুধবার এক বিবৃতিতে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
এর পরদিনই বুধবার ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল অব্যাহত রাখার দাবিতে দয়াগঞ্জ মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রিকশাচালকরা।
বৃহস্পতিবার ঢাকার মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ মিরপুর, মালীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, আগারগাঁও, নাখালপাড়া, রামপুরা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা বিক্ষোভ দেখান।
এর আগে গত মে মাসে ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত কোনো রিকশা চলাচল করতে পারবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বিদ্যুৎচালিত তিন চাকার যানগুলো অটো, ইজিবাইকসহ নানা নামে পরিচিত। দুর্ঘটনার জন্য সড়কে মোটরবাইক এবং ইজিবাইকের চলাচলকে দায়ী করেন তিনি।
পরে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকায় সড়ক অবরোধ করেন চালকরা ও গ্যারেজ মালিকরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংক্ষুব্ধ চালকদের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে।
পরে ‘জীবিকার’ বিষয়টি বিবেচনায় এনে ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করবে পারবে বলে ঘোষণা দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পুরনো খবর
জুরাইনে রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ
ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের বিক্ষোভে পথে পথে জট, ট্রেন বন্ধ
দয়াগঞ্জে সড়ক আটকে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকদের বিক্ষোভ
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের দাবিতে পায়ে চালিত রিকশাচালকদের
মহাসড়কে বিপদ মাথায় উল্টোপথে ব্যাটারিচালিত রিকশা
ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না: কাদের
ব্যাটারিচালিত রিকশা: প্রধানমন্ত্রীকে না 'জানিয়েই' সিদ্ধান্ত