দেশের বিভিন্ন এলাকায় গেছেন কমিশন সদস্যরা, মতামত নিয়েছেন, ডায়ালগ করেছেন, মানুষের কথা শুনেছেন। এজন্যই কেউ কেউ একটু বেশি সময় চাচ্ছেন, বললেন শফিকুল আলম।
Published : 31 Dec 2024, 09:57 PM
জুলাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত সংস্কারের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে প্রথম ধাপে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর কোনোটিই বছরের শেষ দিন পর্যন্ত সুপারিশসহ তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি; সময় চেয়েছে একটি কমিশন।
নতুন বছর, ২০২৫ সালের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে এ কমিশনগুলোর প্রস্তুতি এখনো চলছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার নতুন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে রোববার বলেছিলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে দেওয়ার চেষ্টা করব, তা না হলে জানুয়ারির ৩ তারিখের মধ্যে দিয়ে দেব।”
ছয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জানুয়ারির মধ্যেই সরকার পেয়ে যাবে, আশা করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এদিকে পুলিশ সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় চাওয়ার তথ্য দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সময় বাড়ানোর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের পুরো সংস্কার কমিশনের মধ্যে অনেকে কাজের ব্যাপ্তি অনুযায়ী একটু বেশি সময় চাচ্ছেন। খুব টাইট একটা টাইমফ্রেম ছিল কমিশনের সবার জন্য। অনেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাজ করছিলেন।
“শুক্র ও শনিবার কাজ করেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় গেছেন কমিশন সদস্যরা, মতামত নিয়েছেন, ডায়ালগ করেছেন, মানুষের কথা শুনেছেন। এজন্যই কেউ কেউ একটু বেশি সময় চাচ্ছেন। কিন্তু আশা করছি, জানুয়ারির মধ্যেই সব প্রতিবেদন পেয়ে যাব।”
ছাত্র-জনতার সফল এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি জানিয়েছিল।
৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় নোবেলবিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।
গত অক্টোবরে প্রথম ধাপে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কারে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়।
দ্বিতীয় ধাপে নভেম্বরে গঠন করা হয় গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে কার্যক্রম শুরু করে ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রথম ধাপের ছয় কমিশনের মধ্যে পাঁচটির প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। দ্বিতীয় ধাপের পাঁচ কমিশনের প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয়ার্ধে দিতে হবে।
গত ৪ নভেম্বর প্রথম ধাপের ছয় কমিশনের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। সেখানে কমিশনগুলোর কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়।
এ ছয় কমিশন ওয়েবসাইট খুলে মতামত সংগ্রহ, অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ, মতবিনিময়, জরিপ ও লিখিতভাবে মতামত সংগ্রহ করেছে। সুপারিশমালা প্রস্তুতে এসব প্রস্তাব ও মতামত পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলমান রয়েছে।
• নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন হয় ৩ অক্টোবর। সে হিসাবে ২ জানুয়ারি শেষ হতে যাচ্ছে ৯০ দিন।
• ৬ অক্টোবর গঠন করা হয় সংবিধান সংস্কার কমিশন। ৫ জানুয়ারি এ কমিশনের জন্য প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ সময় ধরা হচ্ছে।
• ১৮ নভেম্বর গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। প্রতিবেদন দিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় পাচ্ছে তারা।
পুরোনো খবর:
সংস্কার নিয়ে ৬ কমিশন গঠনের ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার
৩ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন: বদিউল