বিদ্যুৎ ফেরায় একের পর এক সচল হতে শুরু করেছে মোবাইল টাওয়ার। তবে এখনও সব জায়গায় নেটওয়ার্ক ফেরেনি।
Published : 28 May 2024, 11:40 PM
দুই দিন গ্রাহক ভোগান্তির পর দেশজুড়ে টাওয়ারগুলো একের পর এক সচল হওয়ায় মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির তথ্য বলছে, মঙ্গলবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত দেশের ৫৮ হাজার ২৯৮টি মোবাইল সাইটের (টাওয়ার) মধ্যে সচল হয়নি ২০ হাজার ১৪৩টি, যা মোট টাওয়ারের ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
বিটিআরসির ওয়েবসাইটে ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ৬৪ জেলায় মোবাইল অপারেটরদের অসচল সাইটের পরিসংখ্যান’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
তবে দুই দিনে মোবাইল সাইটের দুই রকম তথ্য দেওয়া হয়েছে। সোমবার বিটিআরসি বলেছিল, দেশের মোট সাইট ৪৫ হাজার ৬১০টি, যেগুলোর মধ্যে সোমবার বিকাল পর্যন্ত ২২ হাজার ২১টি অসচল ছিল। মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে, টাওয়ারের সংখ্যা বলা হয় ৫৮ হাজার ২৯৮টি।
মঙ্গলবার টাওয়ারগুলোর সবশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে বিটিআরসির উপপরিচালক (জনসংযোগ) জাকির হোসেন খাঁন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমক বলেন,
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মাত্রা বেশি হওয়ায় সচল-অচল টাওয়ারের সংখ্যার হিসাবে হেরফের হয়েছিল। তবে সবশেষ প্রতিবেদনে সার্বিক চিত্র রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মোবাইল নেটওয়ার্কের সাইটগুলোর সার্বিক অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করার কথা বলেন তিনি।
বিটিআরসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত সংখ্যার হিসেবে সবচেয়ে বেশি টাওয়ার সচল না হওয়া জেলার মধ্যে রয়েছে কুমিল্লায়, যার পরিমাণ ১ হাজার ১০৪টি এবং শতকরা হিসাবে লক্ষ্মীপুরে সবচেয়ে বেশি ৪৬ শতাংশ।
ঝড়ের পর মোবাইল টাওয়ারগুলো এখনও সচল না হওয়ার জন্য বিদ্যুৎ না থাকাকেই ‘প্রধান কারণ’ বলে মনে করছে টেলিকম অপারেটরগুলোর সংগঠন-অ্যামটব।
সোমবার সংগঠনটি বলেছিল, নেটওয়ার্ক দ্রুত সচল করার জন্য বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে তারা।
উপকূলীয় জেলাগুলোতে রোববার রাত থেকে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার ভোগান্তি শুরু হয়, যা সোমবার দিনে আরও তীব্র হয়। দেশজুড়েই কম-বেশি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি হওয়ায় ঢাকাসহ অন্যান্য জেলাতেও ফোন ও ইন্টারনেট সেবা পেতে সমস্যা হয়।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে বিতরণ লাইন লণ্ডভণ্ড হওয়ায় সোমবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দেশের দুই কোটি ৭০ লাখ গ্রাহক। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল সাইটগুলোও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
রেমাল: বিপর্যস্ত মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেটহীন দীর্ঘ সময়
বিটিআরসি সোমবার জানিয়েছিল, উপকূলীয় জেলাগুলোর পাশাপাশি দেশের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতেও অনেক মোবাইল সাইট বন্ধ ছিল। বরগুনা, পিরোজপুর, বাগেরহাট, ভোলা, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালীর ৭০ শতাংশের বেশি মোবাইল সাইট বন্ধ ছিল।
বিদ্যুৎ আসতে শুরু করায় এসব টাওয়ারের অনেকগুলো একের পর এক সচল হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি ও অ্যামটবের কর্মকর্তারা।
গত ২২ মে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ দশা পেরিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় শনিবার সন্ধ্যায়। তখন এর নাম দেওয়া হয় রেমাল। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি পরিণত হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে।
এর প্রভাবে রোববার বিকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়। পরদিন সকাল থেকে সারা দেশেই বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়ে দুর্বল হয়ে যায় রেমাল।