“১৯৭২ থেকে আর্থিক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় দুর্নীতি অনেক বেড়েছে”, বলেন বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান।
Published : 26 Nov 2024, 12:11 AM
দেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে দুর্নীতি ‘ভয়াবহ রূপ’ নিয়েছে মন্তব্য করে বাংলা একাডেমির সভাপতি শিক্ষাবিদ আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, এর সমাধান করতে হলে দেশে ‘ভালো সরকার’ দরকার। আর এ জন্য ভালো রাজনৈতিক দল দরকার।
সোমবার বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমম্বয় কমিটি’র প্রথম জাতীয় সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
আবুল কাসেম ফজলুল জক বলেন, “আমাদের একটা ব্যাপারে উন্নতি হয়নি। সেটা হল মানুষের মনের, নৈতিক চেতনায়, ভালো-মন্দ বোধ, ন্যায়-অন্যায় বোধ।
“ইউরোপে বলি, আমেরিকায় বলি এসব জায়গায় ভালো করে গবেষণা করে দেখা দরকার। দর্শন-বিজ্ঞানের যে অগ্রগতি ইউরোপ বা লাতিন আমেরিকায় ছিল সেটি আছে। সাধারণত বিজ্ঞানের প্রতি মানুষ শ্রদ্ধাশীল।”
১৯৭২ থেকে আর্থিক উন্নতি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কিন্তু সে তুলনায় দুর্নীতি অনেক বেড়েছে। গত সরকারের সময় ব্যাংকগুলো দুর্গত অবস্থায় পড়েছে।
“ইসলামী ব্যাংক সব পর্যায়ে যারা ছিল তারা জামায়াতে ইসলামীর। ইসলামী ছাত্র শিবির ছাড়া অন্য কেউ এ ব্যাংকে চাকরি পায়নি। আওয়ামী লীগের শাসনের শুরু দিকে বলা হল, ইসলামী ব্যাংককে আর এভাবে চলতে দেওয়া হবে না। তবে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেখা গেল এটি ব্যাংক হিসাবেই নেই।
“বেনজীর আহমেদ যে আইজি ছিলেন, তিনি যেভাবে অর্থ সম্পদ করেছেন, আগের আইজিরাও যে অর্থ সম্পদ করেছেন এগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় আমাদের দুর্নীতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।”
সমাধান করতে ‘ভালো সরকার’ দরকার মত দিয়ে তিনি বলেন, “মন্ত্রীরা যখন অনাচারে লিপ্ত হয় আর ক্ষমতাকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পদ হিসাবে দেখে, সে রকম সরকার দিয়ে দুর্নীতি দমন তো দূরের কথা আমাদের সামনে থাকা বিরাট সম্ভাবনা বাস্তবায়ন করতে পারি না। এজন্য (ভালো) রাজনৈতিক দল গঠন করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, “দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে তা বিদেশে পাচার করেছে প্রভাবশালীরা। ওই সকল দুর্নীতিবাজরা এখন জেলখানায় ‘রাজার হালে’ জীবন-যাপন করছে। তারা জনগণের অর্থ লুটে নিয়েছে, অথচ তাদেরকে জামাই আদরে খাওয়াচ্ছে রাষ্ট্র।”
দুর্নীতি বন্ধে আইন ও নীতিমালা পরিবর্তনের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “এমন বিধান করতে হবে, কেউ ঘুষের টাকা ধরিয়ে দিতে পারলে সে ওই টাকার ৫০ শতাংশ পাবে। কেউ অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন করেছে, এমন তথ্য দিলে এবং তা প্রামাণিত হলে সেই ওই অর্থের ২৫ শতাংশ পাবে।
“এক্ষেত্রে ব্রিটিশ আইনের পরিবর্তে মার্কিন আইন চালু করতে হবে। অপরাধীকে প্রমাণ করতে হবে, তিনি নির্দোষ।”