“মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্ব কেবল ভারতের ভবিষ্যতই গড়ে দেয়নি, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক শক্তিশালী করতে অবদান রেখেছে,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
Published : 27 Dec 2024, 10:08 PM
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
এক শোকবার্তায় তিনি বলেছেন, “মনমোহন সিং অত্যন্ত মানবিক ব্যক্তিত্বের একজন দূরদর্শী নেতা, রাষ্ট্রনায়ক। ভারতের জনগণের কল্যাণ নিশ্চিতে অটল প্রতিশ্রুতির জন্য পরিচিত। ভারতের অর্থনৈতিক রূপান্তরে তার অবদানেই তিনি স্মরণীয় থাকবেন।”
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের ফেইসবুক পেইজে শুক্রবার শোক বার্তাটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে অর্থনীতিবিদ থেকে রাজনীতিতে নাম লেখানো ভারতীয় কংগ্রেসের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মনমোহন সিংকে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের একজন ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ বলা হয়েছে।
ভারতের উদার অর্থনীতির ‘স্থপতি’ হিসেবে বিবেচিত, টানা দুইবারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বৃহস্পতিবার রাতে প্রয়াত হন। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
বিশ্বনেতারা তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, সততা এবং ভারতের উন্নয়নের নেপথ্যে অবদানের প্রশংসা করে শোক প্রকাশ করছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্ব কেবল ভারতের ভবিষ্যতই গড়ে দেয়নি, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক শক্তিশালী করতে অবদান রেখেছে।”
আঞ্চলিক সহযোগিতা উন্নয়নেও মনমোহন সিংয়ের প্রশংসা করেন প্রধান উপদেষ্টা। আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি ও দক্ষিণ এশিয়ায় সহযোগিতা বৃদ্ধিতে তার লক্ষ্য ও দৃঢ় প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন শোক বার্তায়।
মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বিভিন্ন স্মৃতি স্মরণ করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস। ২০০৬ সালে তার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর সেসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের অভিনন্দন বার্তাও তিনি স্মরণ করেছেন শোক বার্তায়। ২০০৭ সালে দিল্লিতে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ২০০৯ সালে হিরণ মুখার্জি বার্ষিক সংসদীয় বক্তৃতায় আমন্ত্রণ পাওয়ার কথাও তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে মনমোহন সিংয়ের পরিবার, ভারতের জনগণ ও সরকারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করেছেন ইউনূস।
১৯৩২ সালে পাঞ্জাবের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেওয়া মনমোহন সিং প্রথম শিখ, যিনি ভারতের সরকারপ্রধান হয়েছিলেন। কেমব্রিজ ও অক্সফোর্ডের ডিগ্রিধারী এই অর্থনীতিবিদ ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের আগে অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স- এর অধীনে দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মনমোহন সিং ভারতকে নতুন রূপ দিয়েছেন। তিনি ১৯৯১ সালের অর্থনৈতিক সংস্কারের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ব্যাপকভাবে স্বীকৃত, যা ভারতের বাজারে বিশ্বায়নের দ্বার উন্মুক্ত করেছিল।
লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছিলেন তিনি। পাশাপাশি দেশকে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে নিয়ে গিয়েছিলেন।
তার মৃত্যুর সংবাদে বিশ্বজুড়ে নেতারা হৃদয়গ্রাহী বার্তা পাঠিয়েছেন বিভিন্ন মাধ্যমে।
আরও পড়ুন-
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই: মনমোহন সিংকে বিশ্ব নেতাদের শ্রদ্ধা
মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য হবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়, ভারতে ৭ দিনের শোক