ছুটির ‘রেশ’ নিয়ে খুলেছে আদালত

আইনজীবীরা মনে করছেন, ছুটির এই ‘আবহ’ মিলিয়ে স্বাভাবিক কাজের ছন্দে ফিরতে চলতি সপ্তাহটি সময় লাগবে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2023, 11:50 AM
Updated : 24 April 2023, 11:50 AM

ঈদের পাঁচদিন ছুটির পর আদালত খুললেও তেমন ‘সরগরম’ হয়ে ওঠেনি প্রথম কার্যদিবস।

সোমবার মহানাগর দায়রা জজ, জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ ঢাকার অনেক আদালতের বিচারক ছুটিতে আছেন এবং বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের উপস্থিতিও তুলনামূলক কম দেখা গেছে।

অনেক মামলার শুনানি হলেও তাতে আইনজীবীরা সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন। আইনজীবীরা মনে করছেন, ছুটির এই ‘আবহ’ মিলিয়ে স্বাভাবিক কাজের ছন্দে ফিরতে চলতি সপ্তাহটি সময় লাগবে আদালত পাড়ায়।

রোজার একমাসের সূচি পেরিয়ে এদিন আগের সময়সূচিতে ফিরেছে আদালত। সকাল সাড়ে ৯টায় অফিস খোলার পর বিচারকাজ শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, এদিন মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারি বিবিধ মামলা পুরোদমে শুনানি হলেও নিয়মিত বিচারকাজ ছিল তুলনামূলক কম।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান ছুটিতে থাকায় অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সৈয়দা হাফছা ঝুমা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানিয়েছেন, ফৌজদারি বিবিধ (সিআর মিস) মামলায় ৭০টি জামিন আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে।

এছাড়া প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালতে আরও ৩২টি ‘সিআর মিস’ মামলা নিষ্পত্তি হয়। এছাড়া একই আদালতে বিভিন্ন ধরনের ৮ থেকে ১০টি ট্রায়াল মামলা শুনানি হয়।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারকাজে অংশ নেন বিচারক এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। তবে এদিন খুব বেশি আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি।

জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বিমল সমাদ্দার বলেন, “এদিন বেশিরভাগ মামলাতেই আইনজীবীরা সময়ের আবেদন করেন। স্বল্পসংখ্যক মামলার শুনানি হয়েছে।“

অন্যান্য ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতেও এ ধরনের চিত্র দেখা যায়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, বিশেষ জজ আদালতসহ অন্যান্য আদালত ও ট্রাইব্যুনালেও দিন কেটেছে কিছুটা ‘ঢিলেঢালা’ পরিবেশে।

ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বলেন, “আমাদের আদালতের বিচারক আজ ছুটিতে থাকায় বিচারকাজে অংশ নেননি।“

ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অবস্থাও ছিল প্রায় একইরকম। ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অনেক বিচারকই এদিন ছুটিতে ছিলেন। যাদের মামলা শুনানির জন্য ছিল, তারা বেশিরভাগই এদিন সময় নিয়েছেন।

এসেছিলেন অনেক আইনজীবী। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মামলার শুনানি হয়নি।

আইনজীবী আতিক পারভেজ বলেন, “ক্লায়েন্টসহ এদিন সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসি। তবে প্রতিপক্ষের আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় এদিন আর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।“

আইনজীবী সাব্বির আহমেদ সজীব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকার দ্বিতীয় নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার শুনানি ছিল। যে মামলায় একজন প্রখ্যত বাউল শিল্পী এবং তার কন্যাসহ তিনজন অভিযুক্ত। এদিন দুইজন অভিযুক্তের পক্ষে আমরা হাজিরা দিই। তবে বিচারক ছুটিতে থাকায় অন্য আসামির পক্ষে শুনানি ছাড়াই সময়ের আবেদন মঞ্জুর হয়।“

প্রথম কার্যদিবসে বিরাজ করা ছুটির ‘আবহ’ কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, “আদালতের কার্যক্রম আগের অবস্থায় ফিরতে এই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে মনে হয়। রোজা ও ঈদ কাটিয়ে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের পদচারণায় আদালত অঙ্গন মুখরিত হতে এ সপ্তাহটা সময় লাগবে।“