ঘুষ লেনদেনের মামলায় আট বছরের দণ্ড পাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারক।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাছিরের জামিন স্থগিত করে ওইদিন দুদকের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন তিনি।
দুদককে এ সময়ের মধ্যে হাই কোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়েছে।
দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, “এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে রয়েছে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তার সাজা হয়েছে। হাই কোর্টের যে বেঞ্চ তাকে জামিন দিয়েছেন, সে বেঞ্চ জামিনের ক্ষেত্রে তার অপরাধের গুরুত্ব যথাযথ বিবেচনায় নেননি। এ জামিন দেওয়া যুক্তিযুক্ত হয়নি।”
এসব যুক্তিতে এনামুল বাছিরের জামিন স্থগিত চাওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “চেম্বার আদালত হাই কোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে দুদকের আবেদনটি ৫ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রেখেছেন।”
গত ১৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. রইস উদ্দিনের হাই কোর্ট বেঞ্চ এনামুল বাছিরকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছিল।
এর আগে গত ২৩ অগাস্ট এ মামলায় এনামুল বাছিরকে আপিল নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত জামিন দিয়েছিল বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাই কোর্ট বেঞ্চ। কিন্তু মূল আপিল আবেদনের সাথে জামিন আবেদন না থাকায় পরদিন ওই জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে আদালত।
গত ১৩ এপ্রিল এনামুল বাছিরের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাই কোর্ট। একইসাথে মামলায় তার বিরুদ্ধে ৮০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড স্থগিত করে রায় সংক্রান্ত বিচারিক আদালতের যাবতীয় নথি তলব করা হয়।
এ মামলায় তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে গত এপ্রিলে জামিন দিয়েছিল হাই কোর্ট বেঞ্চ।
একটি মামলা থেকে বাঁচার আশায় দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তাদের আসামি করে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন।
এর এক সপ্তাহের মধ্যে ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদক। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। বাছিরকে গ্রেপ্তারের আগের দিন একই মামলায় পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা মিজানুরকে গ্রেপ্তার দেখায় দুদক। তাদের দুজনকেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
এ মামলার রায়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম দুইজনকে সাজা দেন।
রায়ে মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬৫ ধারায় ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর এনামুল বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ৩ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি মুদ্রা পাচার আইনের ৪ ধারায় ৫ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৮০ লাখ জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সাজা দেওয়া হয়।
পুরনো খবর