টানা ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকা মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে চিন্তিত নন নাজমুল হোসেন শান্ত।
Published : 23 Apr 2025, 10:23 PM
টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে প্রস্তুতি পর্বের দ্বিতীয় দিনের ঘটনা। সিলেটের একাডেমি মাঠে নিজের ব্যাটিং অনুশীলন শুরুর আগে তাইজুল ইসলামকে নিয়ে নেটে চলে গেলেন মুশফিকুর রহিম। বেশ লম্বা সময় ধরে বাঁহাতি স্পিনারকে 'থ্রো' করলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। মাঝেমাঝে তাইজুলকে কিছু পরামর্শ দিতেও দেখা গেল তাকে।
অনুশীলনের মতো ম্যাচেও তাইজুল, মেহেদী হাসান মিরাজকে বোলিংয়ের সময় নানা কিছু বলতে দেখা যায় মুশফিককে। ব্যাট হাতে ফর্মে না থাকলেও অভিজ্ঞতা থেকে সতীর্থদের সহায়তা করার কাজটি ঠিকঠাক করছেন তিনি। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের রানে না থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে দলে তার অন্যান্য ভূমিকা তুলে ধরলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
সাদা পোশাকের ক্রিকেটে লম্বা সময় ধরে রানের দেখা নেই মুশফিকের ব্যাটে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসেই তিনি আউট হয়েছে চার রান করে। এই সংস্করণে সবশেষ চার ইনিংসে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি ৩৮ ছুঁইছুঁই ব্যাটসম্যান।
গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। এরপর থেকে যেন রান করতে ভুলে গিয়েছেন তিনি। টানা ১২ ইনিংসে আর একবারও চল্লিশ রান করতে পারেননি মুশফিক।
সাম্প্রতিক সময়ে তার আউটের ধরন নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসেই যেমন ওয়েলিংটন মাসাকাদজার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে বসেন মুশফিক। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্লেসিং মুজারাবানির বলে খোঁচা মেরে ধরা পড়েন স্লিপে।
দুই ইনিংসেই মুশফিকের বিদায়ে চাপে পড়ে যায় দল। অথচ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এর আগের তিন টেস্টে দুটি ডাবল সেঞ্চুরি করায় তার ওপর ছিল অনেক দায়িত্ব। কিন্তু সেই প্রত্যাশার ভার নিতে পারেননি দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
সমালোচনার তির ছুটে যাচ্ছে মুশফিকের দিকে। তবে কঠিন সময়ে সতীর্থদের পাশে পাচ্ছেন দেশের সাবেক অধিনায়ক। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ফর্মহীন মুশফিকের পক্ষে ব্যাট ধরলেন অধিনায়ক শান্ত।
“(মুশফিক) অনেক বছর ধরে খেলছেন। তিনি যে শুধু ব্যাটিংয়ে অবদান রাখেন, এমন কিন্তু না। যখন ফিল্ডিং করেন বিভিন্ন পরিকল্পনার অংশ থাকেন। বোলারদের সাহায্য করা বা ব্যাটিং করার সময় ব্যাটসম্যানদের সাহায্য করেন। যখন আমরা অনুশীলন করি, কার কী ঘাটতি আছে, এসব নিয়েও আলাপ হয়।”
অন্যান্য সব কাজ ঠিকঠাক করলেও নিজের মূল কাজেই এখন ব্যর্থ মুশফিক। এরই মধ্যে ৯৫ টেস্ট খেলে ফেলায় এখন তার সামনে দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে একশ টেস্টের দারুণ কীর্তি গড়ার হাতছানি।
তবে রান না করে শুধু অভিজ্ঞতা বা অন্য অবদানের জন্য মাইলফলক পূর্ণ করতে কাউকে দলে বয়ে নেওয়া যে কঠিন, সেটি ভালোই বোঝেন শান্ত। বাংলাদেশ অধিনায়কের আশা, দ্রুতই খারাপ সময় কাটিয়ে উঠবেন মুশফিক।
“অবশ্যই তার ব্যাটিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে তার মাইলফলক বা অভিজ্ঞতা- এরকম কোনো কিছু আমি চিন্তা করছি না। আমার মনে হয়, তিনিও করছেন না। তিনি চেষ্টা করছেন কীভাবে দলে অবদান রাখা যায়।”
“সামনে আরেকটা ম্যাচ আছে, ইনশাল্লাহ তিনি ঘুরে দাঁড়াবেন। আমি আশা ছাড়ছি না। এরকম অনেক সময় গেছে তার। আবার ফেরতও এসেছেন। আমি মনে করি, তিনি আবার ফিরে আসবেন।”