পিএসএল
পিএসএলে নিজের প্রথম দুই ম্যাচে আঁটসাঁট বোলিং করলেও এবার ওভারপ্রতি দশের বেশি রান দিলেন বাংলাদেশের লেগ স্পিনার।
Published : 22 Apr 2025, 10:36 PM
প্রথম দুই ম্যাচের চেয়ে এবার চ্যালেঞ্জটা ছিল ভিন্ন। রিশাদ হোসেনও দেখলেন মুদ্রার উল্টো পিঠ। দুটি উইকেটের স্বাদ তিনি বলেন বটে, তবে রানও দিলেন ওভারপ্রতি দশের বেশি করে।
পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্সের হয়ে মুলতান সুলতান্সের বিপক্ষে মঙ্গলবার চার ওভারে ৪৫ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন রিশাদ। তিনটি ছক্কা ও দুটি চার হজম করেন বাংলাদেশের লেগ স্পিনার। ‘ডট’ বল খেলাতে পারেন কেবল ছয়টি।
পরে বড় লক্ষ্য তাড়ায় ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে তিনি করেন ৪ বলে ২ রান। ৩৩ রানে ম্যাচ হারে তার দল।
লাহোরের জার্সিতে নিজের প্রথম দুই ম্যাচে ৩১ রানে ৩টি ও ২৬ রানে ৩টি উইকেট নিয়েছিলেন রিশাদ।
রাওয়ালপিন্ডি ও করাচিতে ওই দুটি ম্যাচ লাহোর খেলেছিল তিন দিনের মধ্যে। মাঝে ছয় দিনের বিরতির পর মুলতান ক্রিকেট গ্রাউন্ডে মুলতানের মুখোমুখি হয় তারা।
শুধু রিশাদই অবশ্য নন, এদিন খরুচে বোলিং করেন লাহোরের প্রায় সবাই। সাত জন হাত ঘুরিয়ে পাঁচ জনই ওভারপ্রতি রান দেন দশের বেশি। রিশাদ ছাড়া আর কেউ একটির বেশি উইকেট পাননি।
অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি চার ওভারে ৪৩ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। আরেক পেসার হারিস রউফ ৩ ওভারেই দেন ৫৪ রান, পাননি কোনো উইকেট।
মুলতান ২০ ওভারে ৫ উইকেটে করে ২২৮ রান। পিএসএলে এই মাঠে সর্বোচ্চ স্কোর এটিই। আসরে প্রথম খেলতে নেমে ৬টি করে ছক্কা ও চারে ৪৪ বলে ৮৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন ওপেনার ইয়াসির খান।
নিজেদের আগের দুই ম্যাচেই দুইশ ছাড়ানো পুঁজি নিয়ে পরে বোলিং করে জিতেছিল লাহোর, পেসারদের হাত ধরে ভালো শুরুর পর বোলিংয়ে এসে নিজেকে মেলে ধরেছিলেন রিশাদ।
আসরে চার ম্যাচে প্রথমবার আগে বোলিং পেয়ে এবার প্রথম ছয় ওভারে কোনো উইকেট নিতে পারেনি লাহোর। পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৭৯ রান তুলে মুলতানকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন ইয়াসির ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।
সপ্তম ওভারে বল হাতে পেয়ে শুরুটা ভালোই করেন রিশাদ। আঁটসাঁট বোলিংয়ে প্রথম পাঁচ বলে দেন কেবল চারটি সিঙ্গল। তবে শেষ বলে স্লগ সুইপে ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে ২৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন ইয়াসির। ওভারে আসে মোট ১০ রান।
পরের ওভারের শুরুতে রিজওয়ানকে ফিরিয়ে ৮৯ রানের বিস্ফোরক জুটি ভাঙেন বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার আসিফ আলি।
রিশাদ আবার বোলিং পান ইনিংসের দ্বাদশ ওভারে, মুলতানের সংগ্রহ তখন ১ উইকেটে ১২৪। এবার তার প্রথম বল শট খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারেননি ইয়াসির। পরের বলে স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছক্কা মারেন তিনি। তৃতীয় বলে নেন সিঙ্গল।
চতুর্থ বলে উসমান খান দুই রান নেওয়ার পর নেন সিঙ্গল। শেষ বলে সিকান্দার রাজার দারুণ ফিল্ডিংয়ে চার হজম করা থেকে বেঁচে যান রিশাদ, আসে ২ রান। এই ওভারে সব মিলিয়ে খরচ ১২ রান।
রিশাদের পরের ওভারে প্রথম বল পয়েন্ট দিয়ে চার মারার পর ‘ডট’ খেলেন উসমান। তৃতীয় বলে ধরা দেয় উইকেট, অফ স্টাম্পের বাইরের বল রিভার্স সুইপ করে শর্ট থার্ডম্যান ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দেন উসমান।
পরের বল মিস করেন নতুন ব্যাটসম্যান অ্যাশটন টার্নার। পঞ্চম বলে তিনি নেন সিঙ্গল। শেষ বল আকাশে তুলে দেন ইয়াসির, তবে কোনো ফিল্ডারের কাছে যায়নি, আসে দুই রান।
এই ওভারে ৭ রান দিয়ে উইকেটটি নেন রিশাদ।
ইনিংসের পরের ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসে সেঞ্চুরির পথে থাকা বিপজ্জনক ইয়াসিরকে থামান জিম্বাবুয়ের স্পিনিং অলরাউন্ডার রাজা।
রিশাদ নিজের কোটার শেষ ওভারটি করতে আসেন ইনিংসের ষোড়শ ওভারে। এবার তার প্রথম বল লং অন দিয়ে ছক্কার পর দ্বিতীয়টি একই জায়গা দিয়ে চার মারেন টার্নার। তৃতীয় বলে নেন দুই রান।
চতুর্থ বলে রিশাদ পেয়ে যান উইকেট, তবে এটি জামান খান নিজের বলে দাবি করলেও করতে পারেন! টার্নার স্লগ সুইপ খেলার চেষ্টায় পারেননি ঠিকমতো, ওপরে উঠে বল যায় উইকেটের পেছনে। শর্ট ফাইন লেগ থেকে অনেকটা দৌড়ে গিয়ে ডাইভ দিয়ে জামান বল মুঠোয় জমান।
রিশাদের শেষ দুই বলে আসে দুটি করে রান। এই ওভারে আসে মোট ১৬ রান, তার চার ওভারের মধ্যে যা সবচেয়ে খরুচে।